পিএম কেয়ারস ফান্ড চালু করার এক বছরের মধ্যে এর মাধ্যমে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে সরকার। এর মধ্যে খরচ করা হয়নি ৬৪ শতাংশই। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালের ২৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এক বছরে ১০,৯৯০ কোটি টাকা জমা পড়েছে পিএম কেয়ারসে। ওই সময়ের মধ্যে ব্যয় হয়েছে মাত্র ৩,৯৭৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ পড়ে রয়েছে ৭,০১৪ কোটি টাকা।
কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করার জন্য জনগণের কাছ থেকে আর্থিক অনুদান সংগ্রহের লক্ষ্যে করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় পিএম কেয়ারস ফান্ড গঠন করেছিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। যে কোনো ধরণের জরুরী অবস্থার মোকাবিলা, স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ প্রদান ছিল এই ফান্ডের প্রধান উদ্দেশ্য। এক বছরে ফান্ডে অর্থ জমা পড়ে প্রায় ১১ হাজার কোটি। এর মধ্যে ২০২০ অর্থবর্ষে ৩,০৭৭ কোটি এবং ২০২১ অর্থবর্ষে ৭,৬৭৯ কোটি টাকা জমা পড়ে। এছাড়াও সুদ বাবদ ২৩৫ কোটি টাকা জমা হয়। প্রাপ্ত অনুদানের ৪৯৫ কোটি টাকা বিদেশ থেকে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত পি এম কেয়ারসে জমা পড়া অর্থের মাত্র ৩,৯৭৬ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১,৩৯২ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে ৬.৬ কোটি কোভিড ভ্যাকসিনের ডোজ কিনতে। 'মেড ইন ইন্ডিয়া' ভেন্টিলেটর কিনতে ব্যবহার করা হয়েছে ১,৩১১ কোটি টাকা। অভিবাসী শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১,০০০ কোটি।
১৬২টি অক্সিজেন জেনারেশন প্ল্যান্টের জন্য খরচ করা হয়েছে ২০১.৫৮ কোটি টাকা। কোভিড ভ্যাকসিন টেস্ট এবং রিলিজের জন্য সরকার পরিচালিত ল্যাবগুলিকে আপগ্রেড করতে ২০.৪১ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। বিহারের মুজফ্ফরনগর ও পাটনায় দুটি কোভিড-ডেডিকেটেড হাসপাতাল এবং আরটিপিসিআর টেস্টের জন্য রাজ্যে ১৬টি ল্যাবের পরিকাঠামো তৈরিতে ৫০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে।
তবে পিএম কেয়ারস ফান্ডের টাকায় কেনা ভেন্টিলেটরগুলোর অধিকাংশই ত্রুটিপূর্ণ ছিল। এছাড়াও প্রশিক্ষিত মেডিক্যাল কর্মীদের অভাবে ভেন্টিলেটর চালানোর ট্রায়াল সফল হয়নি।
অন্যদিকে, সম্প্রতি আরটিআইয়ের মাধ্যমে জানা গেছে, কোভিড টিকা তৈরিতে বরাদ্দ অর্থের এক টাকাও দেয়নি পিএম কেয়ারস। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক একথা জানিয়েছে।
বিরোধীরা এর আগে একাধিকবার পিএম কেয়ারস ফান্ড অডিটের দাবি তুলেছে। এই নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে মামলাও দায়ের হয়েছে। কেন্দ্রের তরফ থেকে আদালতে বলা হয়েছে, এই ফান্ড ভারত সরকারের তহবিল নয়। এই ফান্ডে প্রাপ্ত অর্থ ভারতের কনসোলিডেটেড ফান্ডে যায় না। এই ফান্ডের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন