ফের প্রকাশ্য জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করলেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। প্রধানমন্ত্রীকে "অত্যন্ত অহংকারী" বলে অভিহিত করলেন তিনি। কৃষি আইন নিয়ে আলোচনাকালীন তাঁর সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী বলে দাবি সত্যপাল মালিকের।
রবিবার হরিয়ানায় একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় কৃষি আইন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথপোকথনের প্রসঙ্গ তোলেন সত্যপাল মালিক। তিনি বলেন, "প্রধানমন্ত্রী অহংকারী। কৃষি আইন নিয়ে যখন তাঁর সাথে কথা বলতে গিয়েছিলাম ৫ মিনিটের কথোপকথনে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছিলেন তিনি। আমি তাঁকে বললাম ৫০০ জন কৃষক মারা গেছেন। এঁরা সকলেই আমাদের নিজেদের। উনি তখন জিজ্ঞেস করলেন, 'তাঁরা কি আমার জন্য মারা গেছেন?' আমি তাঁকে বলেছি হ্যাঁ আপনার জন্য মারা গেছেন কারণ আপনি দেশের প্রধান।"
মেঘালয়ের রাজ্যপাল জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সাথে সেদিন খুব তর্ক হয়েছিল তাঁর। প্রধানমন্ত্রীর কথায় এরপর তিনি অমিত শাহের সাথে দেখা করেন। তিনি বলেন, "আমি যখন অমিত শাহের সাথে দেখা করে সমস্ত ঘটনা বললাম, তিনি আমাকে বললেন, 'সত্য, উনি (প্রধানমন্ত্রী) ওনার চিন্তাশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। তুমি চিন্তামুক্ত থাকো। আমাদের সাথে যোগাযোগ রেখো।"
সত্যপাল মালিকের ভাষণের এই অংশের ভিডিও কংগ্রেসের অফিসিয়াল ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা হয়েছে। ভিডিওর ক্যাপশনে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে লেখা হয়েছে, "অহংকারী, নিষ্ঠুর এবং সংবেদনহীন। বিজেপির রাজ্যপালের এই মন্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ব্যক্তিত্বের মধ্যে থাকা এই 'গুণগুলির' উল্লেখ করা হয়েছে। গণতন্ত্রের জন্য এই গুণগুলি উদ্বেগের।"
কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গেও ট্যুইটারে এই ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, "মেঘালয়ের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক প্রকাশ্যে বলছেন কৃষকদের ইস্যুতে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রধানমন্ত্রীকে 'পাগল' বলে অভিহিত করেছেন। সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তিরা একে অপরের সম্পর্কে এমন অবজ্ঞার ভঙ্গিতে কথা বলছেন। নরেন্দ্র মোদী, এটা কি সত্য।"
মেঘালয়ের রাজ্যপালের এই মন্তব্য নিয়ে জাতীয় রাজনীতি তোলপাড় হলেও বিজেপি, প্রধানমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এখনও এবিষয়ে মুখ খোলেননি। তবে এর আগেও একাধিক ইস্যুতে বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক।
সত্যপাল মালিকের এই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ায় এদিন বিকেলে এক সংবাদমাধ্যমে আগের দাবি থেকে সরে এসে তিনি জানিয়েছেন, “প্রধানমন্ত্রী কোনো কথা শোনার জন্য তৈরি ছিলেন না…তিনি আমার মতকে অস্বীকার করার চেষ্টা করছিলেন… এবং তিনি আমাকে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে বলেন। অমিত শাহ মোদীজীকে খুবই সম্মান করেন। তিনি আমাকে বলেন, কিছু মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বুঝিয়েছে। একদিন প্রধানমন্ত্রী ঠিক বুঝতে পারবেন।”
এর পাশাপাশি মালিক বলেন, 'আমি জানাতে চাই যে অমিত শাহ আমাকে প্রধানমন্ত্রীর অসৎ উদ্দেশ্য ছিলো জাতীয় কিছু বলেননি। তিনি আমাকে শুধু বলেছেন, তিনি আমার বক্তব্য তিনি বুঝতে পেরেছেন।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন