মুম্বাইয়ের এক ট্রায়াল কোর্টে জামিন পেলেন পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে ১৩,৫০০ কোটি টাকা জালিয়াতির ঘটনায় অভিযুক্ত ধনেশ ব্রজলাল শেঠ। যিনি পলাতক ব্যবসায়ী মেহুল চোকসির খুবই ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। ধনেশ শেঠ-এর আইনজীবী বিজয় আগরওয়াল গতকাল এই মামলার শুনানি চলাকালীন জানান – সিবিআই এই মামলায় বিচারপতির কাঁধে বন্দুক রাখতে চাইছে।
জামিন পাওয়া ধনেশ ব্রজলাল শেঠ পিএনবি জালিয়াতিতে অভিযুক্ত তিনটি ফার্ম-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছিলেন। তাঁর জামিনের আবেদনের শুনানিতে আইনজীবী বিজয় আগরওয়াল জানান, জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব শেষ হয়ে গেছে। বর্তমান মামলায় তদন্তও শেষ হয়েছে এবং চার্জশিটও দাখিল করা হয়েছে। যেখানে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের কথা বলা হয়নি। সুতরাং এটা প্রমাণিত যে ধনেশ ব্রজলাল শেঠকে এখন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন নেই।
এদিন আইনজীবী আগরওয়াল আরও জানান, গত তিন ধরে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়নি এবং এখন সিবিআই বিচারপতির কাঁধে বন্দুক রেখে চলতে চাইছে। তিনি আরও জানান, ১ লক্ষ টাকার সিওরিটিতে ধনেশ ব্রজলাল শেঠকে জামিন দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২০১৮ সালে এই মামলার অন্য অভিযুক্ত, গীতাঞ্জলি জেমসের অ্যাসিস্ট্যান্ট ফিনান্স এক্সিকিউটিভ নীতিন প্রেম শাহী, গীতাঞ্জলি জুয়েলস-এর এজিএম অনিয়াথ শিবম নায়ার জামিন পান। উল্লেখ্য, গতকালই ডোমিনিকার হাইকোর্ট থেকে শারীরিক কারণে জামিন পেয়েছেন এই মামলার অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত মেহুল চোকসি।
সিবিআই-এর চার্জশিট অনুসারে, মেহুল চোকসি পলাতক হবার দু'মাস আগেই এঁদের জানিয়েছিলেন যে তাঁরা ইডি-র কারণে সমস্যায় পড়তে পারেন। ওই চার্জশিট অনুসারে মেহুল চোকসি পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের কর্মচারীদের হাত করে ১৬৫টি লেটার অফ আন্ডারটেকিং ইস্যু করেন এবং ব্যাঙ্ক তার অভিযোগে যে ১৪২টি লেটার অফ আন্ডারটেকিং-এর কথা উল্লেখ করেছিলো তার মধ্যে এগুলো নেই। ব্যাঙ্কের কর্মচারীদের সঙ্গে গোপন আঁতাত থাকার কারণে এই লেটার অফ আন্ডারটেকিংগুলো কখনই ব্যাঙ্কের কোর সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
সিবিআই আরও জানিয়েছে, তদন্তে ৩৪৭টি ফরেন লেটার অফ ক্রেডিট পাওয়া গেছে, যেগুলো ২০১৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে বিভিন্ন ওভারসীজ ব্যাঙ্ককে দেওয়া হয়েছিলো মেহুল চোকসির সংস্থার পক্ষ থেকে। এরমধ্যে ২০১৪ সালে দেওয়া হয় ৮৮টি, ২০১৫ সালে দেওয়া হয় ১৪৩টি এবং ২০১৬ সালে দেওয়া হয় ১১৬টি। এই ফরেন লেটার অফ ক্রেডিট দেওয়া হয়েছিলো মেহুল চোকসির সংস্থা গিলি ইন্ডিয়া লিমিটেড, গীতাঞ্জলি এক্সপোরটস কর্পোরেশন লিমিটেড, নক্ষত্র ব্র্যান্ডস লিমিটেড এবং আস্মি জুয়েলারী ইন্ডিয়া লিমিটেডের নামে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন