ফের একবার বিজেপি ও একনাথ শিন্ডের সরকারকে প্রকাশ্য জনসভা থেকে তুলোধোনা করলেন উদ্ধব ঠাকরে। মঙ্গলবার এক দলীয় জনসভা থেকে মহারাষ্ট্র তথা সমগ্র ভারতের রাজনীতি তার ‘সৌজন্যতা’ খুইয়েছে বলেও আক্ষেপ করেন শিবসেনা (ইউবিটি) প্রধান।
বর্তমান ভারতের রাজনীতির সঙ্গে ‘আইপিএল’-এর তুলনা করে এদিন উদ্ধব ঠাকরে বলেন, “আজ মহারাষ্ট্র তথা গোটা দেশের রাজনীতির স্তর তলানিতে এসে ঠেকেছে। বর্তমানে দেশের রাজনীতি আইপিএল-এর মতো হয়ে গিয়েছে। এখন আর বোঝা যায় না কে কোন দলের হয়ে খেলছে। আজকাল মানুষের মন খারাপ। কারণ সরকার এখনও জনগণের প্রশ্নে কর্ণপাত করে না। এখন ‘দুয়ারে সরকার’-এর মতো কর্মসূচী রয়েছে, কিন্তু সেই জনগণের ঘরের কী অবস্থা তা নিয়ে সরকার মাথা ঘামায় না।”
গত এক বছরের মধ্যে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি পরপর দু’বার চরম নাটকীয় ‘সার্কাস’-এর সাক্ষী থেকেছে। প্রথমে ২০২২ সালের মাঝামাঝি নাগাদ উদ্ধব ঠাকরের বিশ্বস্ত সহযোগী একনাথ শিন্ডে দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে প্রচুর বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে বিজেপিকে সমর্থন করেন। তাতেই ভেঙে যায় তৎকালীন শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের জোট সরকার। বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে নতুন করে সরকার গঠন করে মহারাষ্ট্রের নয়া মুখ্যমন্ত্রী হন একনাথ শিন্ডে। এরপর আবার কয়েকদিন আগেই রাতারাতি দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে একাধিক বিধায়কের সমর্থন নিয়ে বিজেপি-শিন্ডে শিবিরে যোগ দেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের নিজের ভাইপো অজিত পাওয়ার। সরকারে যোগ দিয়েই বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়নবিশের সঙ্গে যুগ্মভাবে মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী হন অজিত।
আর এই ঘটনা নিয়েই কয়েকদিন আগে দেবেন্দ্র ফড়নবিশকে তাঁর ঘরের মাঠ নাগপুরের সভা থেকে তীব্র কটাক্ষ করেন বালাসাহেব পুত্র। কখনোই এনসিপি-এর সঙ্গে জোট না করার যে কথা নিজের সমর্থকদের দিয়েছিলেন ফড়নবিশ, সেই কথার খেলাপ করেছেন বলে জানান উদ্ভব। এমনকি দেবেন্দ্রকে ‘কলঙ্ক’ বলেও সম্বোধন করেন তিনি।
আর শিবসেনা (ইউবিটি) প্রধানের এই মন্তব্যে ব্যাপক চটেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা নাগপুরের আরেক হেভিওয়েট বিজেপি নেতা নীতিন গড়করি। জবাবে তিনি জানিয়েছিলেন, “বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে তিনি আলোচনা করতেই পারেন কিন্তু এত নিম্নস্তরের ব্যক্তিগত আক্রমণ মহারাষ্ট্রের রাজনীতির সংস্কৃতির সঙ্গে যথেষ্ট বেমানান।”
মঙ্গলবার গড়করির এই জবাবের পাল্টা উত্তর দিতে গিয়ে উদ্ধব জানিয়েছেন, “আমি শুধু একটা শব্দ ব্যবহার করেছি আর তাতেই আপনারা দুঃখ পেয়ে গেলেন। আপনারা তো মানুষের পরিবারকেও ধ্বংস করে দেন, তখন? যেখানে আমার শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে কটূক্তি করা হয়েছে সেখানে আমি শুধু একটা শব্দ ‘কলঙ্ক’ বলেছি। আসলে আমি আপনাদের আয়না দেখিয়েছি।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন