কয়লার অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন বিঘ্নিত হতে পারে, এরকম একটি আশঙ্কার কথা শোনা গিয়েছিল। কিন্তু সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দেয় কেন্দ্রের কয়লা ও বিদ্যুৎ মন্ত্রক। দুই মন্ত্রকের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, কয়লা মজুত থাকা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
অথচ কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বা সিইএ জানিয়েছে, ১৬টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কোনও কয়লা মজুত নেই। ৩০টি কেন্দ্রে মাত্র একদিনের কয়লা মজুত আছে। ১৮টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে দু'দিনের কম কয়লা মজুত রয়েছে। সুতরাং, স্পষ্ট যে ৩৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা মজুত নেই। এই সুযোগে কেন্দ্রে কয়লার চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে যাওয়াকে অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন বলে দাবি করেছে কেন্দ্র। যদিও কেন্দ্রের এই দাবি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎ ঘাটতি হওয়া নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছে দিল্লি, ওড়িশা, অন্ধপ্রদেশ, পাঞ্জাব, গুজরাটও।
শনিবার বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে দিল্লিতে আশঙ্কা ছড়ায় বিদ্যুৎ সংস্থা টাটা পাওয়ারের মেসেজে। কয়লার জোগান কম, তাই দুপুর দু'টো থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংকট দেখা দিতে পারে। বিদ্যুতের খরচ কমানোর জন্য অনুরোধ জানায় সংস্থা। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রধানমন্ত্রীকে এই ব্যাপারে চিঠি পাঠান।
যদিও কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রী আরকে সিং এবং কয়লা মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশি চিঠি প্রসঙ্গে বলেন, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের চিঠি পাঠানো উচিত হয়নি। কোনও রকম কোনও বিদ্যুৎ সংকট নেই। জোশি বলেন, কোথাও বিদ্যুৎ সংকট হওয়া নিয়ে কোনও আশঙ্কা তৈরি হয়নি। দেশে চার কোটি ৩০ লক্ষ টন উত্তোলিত কয়লা মজুদ আছে। এই কয়লা দিয়ে ২৪ দিনের বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা যায়। বিভিন্ন তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে ৭২ টন কয়লা মজুত আছে, যা দিয়ে চারদিনের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে। রাষ্ট্রায়ত্ত কোল ইন্ডিয়া লিমিটেডের কাছে ৪০০ লক্ষ টন কয়লা মজুত আছে।
প্রশ্ন উঠেছে, কেন্দ্রের বহুল প্রচারিত কয়লা ক্ষেত্রের বেসরকারিকরণে দেশের কি লাভ হল। যদিও জোশির দাবি, এবছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কয়লা বিদ্যুৎ উৎপাদন ২৪ শতাংশ বেড়েছে। দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়ার অভিযোগ, যেকোনও সমস্যাকে খাটো করে দেখে নিজেদের বড়াই করে চলেছে কেন্দ্র।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন