তবে কি নাম এবার বদলাচ্ছে দেশের নামও? জি২০ সম্মেলনের অতিথিদের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মূর তরফ থেকে পাঠানো নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্রে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’ লেখা থেকেই এমন জল্পনা ছড়িয়েছে দেশের রাজনৈতিক মহলে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ডাকা সংসদের বিশেষ অধিবেশনে এই নিয়ে বিল পেশ করা হতে পারে বলেও চাপানউতোর শুরু হয়েছে। কংগ্রেস-সহ বিরোধী মহাজোট ‘ইন্ডিয়া’-এর শরীক দলগুলির পক্ষ থেকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে।
আগামী ৮ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর রাজধানী নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে জি২০ সম্মেলন। আর সেই বৈঠকের মাঝেই ৯ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মূর তরফে বিভিন্ন দেশের নেতাদের জন্য একটি নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক-সহ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি ও সমস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের ওই নৈশভোজে যোগদান করার জন্য আমন্ত্রণপত্রও পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সেই আমন্ত্রণপত্রের শুরুতে চিরাচরিত ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’-এর জায়গায় লেখা রয়েছে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’। তবে এর পক্ষে যুক্তি দিয়ে বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, ভারতীয় সংবিধানের ১নং আর্টিকেলেও দেশের নাম হিসেবে ইন্ডিয়া’র পাশাপাশি ‘ভারত’ শব্দটিকেও ব্যবহার করা হয়েছে।
কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ জয়রাম রমেশ এই নিয়ে টুইটারে (বর্তমানে X) লিখেছেন, “তাহলে যেটা শুনেছিলাম, সেটাই সত্যি। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে জি২০ সম্মেলনের অতিথিদের পাঠানো নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্রে চিরাচরিত ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’-এর জায়গায় ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’ লেখা রয়েছে। এখন, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১ পড়তে হবে এভাবে: "ভারত, যা আগে ইন্ডিয়া ছিল, ইউনিয়ন অফ স্টেটস হবে।" কিন্তু এখন তো এই "ইউনিয়ন অফ স্টেটস"ও আক্রমণের মুখে রয়েছে।”
আপ সুপ্রিমো তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল কটাক্ষ করে এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, “বিরোধী INDIA জোটের নাম যদি আমরা বদলে ‘ভারত’ করে দিই, তাহলে কি বিজেপি দেশের নাম ‘ভারত’-এর বদলে অন্যকিছু রাখবে?”
উল্লেখ্য, মাত্র দুদিন আগেই বিজেপির আদর্শগত পরামর্শদাতা RSS-এর তরফে দেশের নাম ‘ইন্ডিয়া’-এর বদলে ‘ভারত’ ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছিল। RSS প্রধান মোহন ভাগবত জানিয়েছিলেন, “আমাদের অবিলম্বে ইন্ডিয়া নামটি বাতিল করে ভারত শব্দের ব্যবহার শুরু করা উচিত। বিশ্বের যেখানেই যান, আমাদের দেশের নাম ভারত অপরিবর্তিত থাকা উচিত। মৌখিক ও লিখিত, দুই মাধ্যমেই দেশের নাম ভারত বলা উচিত।”
প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই সংসদে বিশেষ অধিবেশনের ডাক দেওয়া হয়েছে। সেখানে কেন্দ্রের তরফে কোন কোন বিল পেশ করা হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই দেশীয় রাজনীতিতে যথেষ্ট জল্পনা শুরু হয়েছে। এবার রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণপত্রে দেশের নামে বদল দেখে রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, এবার সংসদে দেশের নাম ইন্ডিয়া থেকে বদলে ভারত করে দেওয়ার জন্য প্রস্তাব আনতে পারে বিজেপি সরকার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন