অনাস্থা প্রস্তাব বিতর্কের পর অবশেষে বৃহস্পতিবার লোকসভায় আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু মণিপুর নিয়ে কথা বলার পরিবর্তে ২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিরোধী মহাজোটকে আক্রমণ করে গেছেন তিনি। এই নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর উপরে ক্ষোভ উগরে দিলেন রাহুল গান্ধী।
বৃহস্পতিবার সংসদের নিম্নকক্ষে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখার সময় সংসদে উপস্থিত ছিলেন না রাহুল। কিন্তু শুক্রবারের সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি সবটাই দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “মণিপুর একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেই বিষয় নিয়ে এত অপেক্ষার পর প্রধানমন্ত্রী কী বললেন? কিছুই না। এরকম একটা সংবেদনশীল ইস্যু নিয়ে কথা বলতে উঠে উনি হাসছেন, মজা করছেন, তাঁর নাম নিয়ে গোটা সংসদ জুড়ে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। এসব দেখে আমি দুঃখিত।” কংগ্রেস সাংসদ আরও জানিয়েছেন, “ইস্যুটা ছিল মণিপুর। কংগ্রেস নয়, বিরোধীরা বা রাহুল গান্ধীও নয়। প্রধানমন্ত্রী এদিন মণিপুর নিয়ে কথা না বলে শুধু নিজেকে নিয়ে, নিজের স্বপ্ন ও লক্ষ্য নিয়েই কথা বলে গেলেন।”
কেরালার ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদ শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আরও জানিয়েছেন, “প্রধানমন্ত্রী একটা বিষয় কিছুতেই বুঝতে পারেন না যে উনি শুধুমাত্র একজন সাধারণ রাজনীতিবিদ নন। উনি আমাদের প্রধানমন্ত্রী, আমার প্রধানমন্ত্রী। আর একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উনি রাজনীতির উর্ধ্বে। উনি একজন দলীয় নেতার মতো ব্যবহার করতে পারেন না।” প্রধানমন্ত্রীর হাসিঠাট্টা নিয়ে প্রাক্তন কংগ্রেস প্রধানের আরও দাবি, “ওঁর যদি আমাকে নিয়ে, কংগ্রেস নিয়ে, বিরোধীদের নিয়ে মজা করতেই হত, তাহলে সেটা তিনি সংসদের বাইরে জনসমক্ষেই করতে পারতেন। কিন্তু সংসদে বসে মণিপুর নিয়ে আরেকটু গুরুত্ব সহকারে বক্তব্য রাখা উচিত ছিল তাঁর।”
বৃহস্পতিবার লোকসভায় মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে সে বিষয়ে তাঁর বিশেষ কিছু বলার নেই। কারণ, মণিপুর নিয়ে ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রায় সব কথাই বলে দিয়েছেন। সেই নিয়েও মোদী সরকারকে তীব্র সমালোচনা করে রাহুল জানান, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীকে সরানোর কোনও প্রয়োজন নেই কারণ তিনি নাকি কেন্দ্রের নেওয়া সমস্ত সিদ্ধান্তের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছেন। তার মানে আমরা কী বুঝবো? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই ওই রাজ্যে শান্তি ফেরাতে চান না? তিনি তার মানে চান ওই রাজ্যে লুঠপাট চলুক, সাধারণ মানুষ অস্ত্র হাতে ঘুরে বেড়াক? তিনিই চেয়েছেন, মণিপুর হিংসার আগুনে জ্বলতে থাকুক?”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন