‘সংসদ, সীমানা, সমাজ, রাস্তা – বিজেপি শাসনে কোনোটাই আর নিরাপদ নয়।’ বৃহস্পতিবার এই ভাষাতেই বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা। গতকাল মণিপুরে ৮৭ জন কুকি-জো-র দেহর গণ শেষকৃত্যর এক ভিডিও নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোষ্ট করে এদিন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা এই মন্তব্য করেন।
মণিপুরের সাম্প্রতিক জাতিদাঙ্গায় নিহত কুকি জো জনগোষ্ঠীর ৮৭ জনের দেহ গতকাল চূড়াচন্দ্রপুরে কবর দেওয়া হয়। সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এরমধ্যে ৪১টি দেহ ইম্ফলের বিভিন্ন মর্গ থেকে বিমানে করে নিয়ে আসা হয় এবং বাকি ৪৬টি দেহ চূড়াচন্দ্রপুর জেলা হাসপাতালের মর্গ থেকে আনা হয়। এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর কাংপোকপিতে ১৯ জনের দেহ কবর দেওয়া হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার এই ঘটনার ভিডিও পোষ্ট করে কংগ্রেস নেত্রী বঢরা লেখেন, “একবার ভেবে দেখুন, মণিপুর হিংসায় মৃত্যু হওয়া মানুষদের ৮ মাস পরে শেষ কাজ করা হচ্ছে। মণিপুর নিয়ে সংসদে যখন প্রশ্ন করা হয়েছিল তখন সরকার এই ঘটনার দায় গ্রহণের বদলে সমানে অসংলগ্ন উত্তর দিয়ে গেছিল।”
তিনি আরও বলেন, “আর প্রধানমন্ত্রী যেখানে বসেন এখন তো সেই সংসদও নিরাপদ নয়। কারণ সেখানে প্রশ্ন করার জন্য প্রায় ১৫০ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়েছে। বিজেপির রাজত্বে সংসদ, সীমানা, রাস্তা, সমাজ কিছুই নিরাপদ নয়।”
গতকাল গণ শেষকৃত্যের পর টুইবুয়ং-এ কড়া নিরাপত্তায় এক শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়। গত সোমবারেই এক হিংসার ঘটনার পর চূড়াচন্দ্রপুরে ১৪৪ ধারা জারি ছিল। যে হিংসার ঘটনায় কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়।
গত ৩ মে থেকে জাতি-দাঙ্গা শুরু হয় মণিপুরে। কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন শতাধিক মানুষ। আহত হয়েছেন ৩১০ জন মানুষ। হিংসা চলাকালীন রাজ্যের ২৭২ টি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন মোট ৩৭,৪৫০ জন।
মণিপুরে হাইকোর্টের এক নির্দেশকে ঘিরে ৩ মে, মণিপুরে প্রথম সংঘর্ষ শুরু হয়। জানা যায় নিজেদের তফশিলি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্তির জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে 'মেইতেই সম্প্রদায়' (Meitei/Meetei)। আবার, 'মেইতে সম্প্রদায়'-এর দাবির বিরোধিতা করে আসছে কুকি-সহ অধিকাংশ আদিবাসী সংগঠন। তাদের বক্তব্য, মেইতেরাও যদি তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি পেয়ে যায়, তাহলে আদিবাসীদের অধিকার ক্ষুন্ন হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন