মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেন কাতারে মৃত্যুদণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত ৮ জন প্রাক্তন নৌসেনা আধিকারিক। ইতিমধ্যেই তাঁদের মধ্যে ৭ জন দেশে ফিরে এসেছেন। বাকি ১ জনকে দেশে ফেরানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। কাতারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ভারত সরকারের বিদেশমন্ত্রক। এই ঘটনাকে সাউথ ব্লক রীতিমত ‘কূটনৈতিক জয়’ হিসাবেই দেখছে।
কাতারের ‘দাহরা গ্লোবাল টেকনোলজিস অ্যান্ড কনসাল্টিং সার্ভিসেস’ নামক নৌসেনাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার এক সংস্থায় কর্মরত ছিলেন ভারতের প্রাক্তন ওই আট নৌসেনা কর্তা। গত বছর ৮ জনের বিরুদ্ধেই ইজরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি এবং গোপন তথ্য পাচারের মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠে। ২০২২ সালের আগস্ট মাসে সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই দোহা থেকে আটজনকে গ্রেফতার করে কাতারের গোয়েন্দা সংস্থা।
ভারত সরকারের তরফে তাঁদের মুক্তির জন্য একাধিক চেষ্টা করা হলেও তাঁদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপর, গত বছরের মার্চ মাস থেকে নৌসেনা কর্তাদের বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়। বিচারে তাঁদের মৃত্যুদন্ডের সাজা দেওয়া হয়।
এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই ভারতের বিদেশমন্ত্রকের তরফ থেকে একটি বিবৃতি জারি করে ঘটনাটি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করা হয়। আদালতের রায়কে ‘মর্মান্তিক’ বলে অভিহিত করে বিদেশমন্ত্রক। পাশাপাশি মৃত্যুদন্ডে সাজাপ্রাপ্তদের সমস্তরকম আইনি সহায়তা দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়।
এই ৮ জন হলেন ক্যাপ্টেন নভতেজ সিং গিল, ক্যাপ্টেন বীরেন্দ্র কুমার ভার্মা, ক্যাপ্টেন সৌরভ বশিষ্ট, কমান্ডার অমিত নাগপাল, কমান্ডার পুরনেন্দু তিওয়ারি, কমান্ডার সুগুনাকর পাকালা, কমান্ডার সঞ্জীব গুপ্ত এবং নাবিক রাগেশ। বিদেশমন্ত্রকের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছিল – ‘ওই আটজন প্রত্যেকেই ভারতের নৌসেনার কমান্ডার-ক্যাপ্টেনের মতো শীর্ষপদে ছিলেন এবং প্রত্যেকেই অন্ততপক্ষে ২০ বছর নৌসেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন।‘
পরবর্তীতে, বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে কাতারের আদালতে প্রাক্তন নৌসেনা কর্তাদের মৃত্যুদন্ডের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলা গৃহীতও হয়। মামলার শুনানির পর মৃত্যুদণ্ডের সাজা বদলে ৮ জনেরই কারাদন্ড হয়। কিন্তু হাল ছাড়েনি বিদেশমন্ত্রক। কাতার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দর কষাকষি চলতেই থাকে। অবশেষে আজ ৮ প্রাক্তন সেনা আধিকারিককে মুক্তি দিল কাতার কর্তৃপক্ষ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন