আদানি ইস্যুতে উত্তাল সংসদ। এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং শিল্পপতি গৌতম আদানির ছবি তুলে ধরে সংসদে সুর চড়ালেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
মোদী এবং আদানির ছবি তুলে ধরে সংসদে রাহুল বলেন, 'আমি আদানি ও মোদীর সম্পর্কের কথা বলি। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আদানিদের সম্পর্কের শুরু। তারপর থেকে মোদীর প্রতি অনুগত থেকেছেন উনি (আদানি)।'
রাহুল গান্ধী বলেছেন, '২০১৪ সালে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় ৬০৯ নম্বরে ছিলেন আদানি, তারপরে জাদু ঘটেছে। ভারত জোড়ো যাত্রার সময়, সাধারণ মানুষ জিজ্ঞাসা করেছিল যে কীভাবে তিনি (আদানি) এতটা সফল হলেন এবং দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর কী সম্পর্ক?'
মোদীর হাত ধরে কীভাবে উত্থান আদানির?
এদিন সংসদে রাহুল গান্ধী বলেন, 'আসল জাদু শুরু হয় ২০১৪ সালে, যখন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দিল্লিতে আসেন নরেন্দ্র মোদী। ভারতে বিমানবন্দরের উন্নয়নের পরিকল্পনা তৈরি করেন তিনি (মোদী)। এই সময় নিয়ম ছিল, কেউ বিমানবন্দর ব্যবসায় না থাকলে তাকে চুক্তিতে নেওয়া যাবে না। কিন্তু মোদী সরকার এই নিয়ম পরিবর্তন করে, আদানির হাতে ৬টি বিমানবন্দর হস্তান্তর করে।'
রাহুল বলেন, 'আগে আদানির বিমানে যাত্রা করতেন তিনি (মোদী)। এখন আদানি তাঁর বিমানে মোদীজির সঙ্গে ভ্রমণ করেন। প্রথমে বিষয়টি গুজরাটের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। তারপর তিনি (আদানি) দেশে এবং এখন আন্তর্জাতিক হয়ে উঠেছেন।'
রাহুল অভিযোগ করেন, 'মোদীজি সারা বিশ্বে যান, কী হয় সেখানে? তিনি বাংলাদেশে যান, সেখানে বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। তারপরে, আদানির সঙ্গে ২৫ বছরের চুক্তি করে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।'
রাহুল গান্ধী প্রশ্ন তুলে বলেন, 'গত ২০ বছরে বিজেপিকে কত টাকা দিয়েছে আদানি?' সঙ্গে তিনি জানান, '২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার সংসদীয় কমিটিকে শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎ বোর্ডের চেয়ারম্যান জানিয়েছিলেন, তাঁকে রাষ্ট্রপতি রাজাপক্ষে বলেছেন আদানিকে বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প দেওয়ার জন্য তাঁকে চাপ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।'
কংগ্রেস নেতা রাহুল বলেন, 'এটি ভারতের বিদেশ নীতি নয়। এটি আদানির ব্যবসার নীতি।'
এদিন আদানি গোষ্ঠীতে এলআইসি (LIC)-র বিনিয়োগ প্রসঙ্গও টেনে আনেন রাহুল। তিনি বলেন, 'ভারতের সরকারি ব্যাঙ্কগুলি আদানিজীকে হাজার হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে। এসবিআই (SBI), পিএনবি (PNB)-র মতো ব্যাঙ্কগুলিও এর অন্তর্ভুক্ত। এই সব ব্যাঙ্কের টাকা, এলআইসির টাকা যাচ্ছে আদানিতে। কেউ তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ালেই ইডি, সিবিআই-এর তদন্তকারী সংস্থাগুলি চলে আসছে।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন