আর সাংসদ নন রাহুল গান্ধী। শুক্রবার লোকসভার স্পীকার ওম বিড়লা খারিজ করে দিলেন কংগ্রেস সাংসদের সদস্যপদ। ইতিমধ্যেই লোকসভার সচিবালয়ের পক্ষ থেকে একথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিন লোকসভা সচিবালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শ্রী রাহুল গান্ধী, কেরালার ওয়াইনাড সংসদীয় কেন্দ্রের লোকসভা সাংসদ, লোকসভার সদস্য থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। কারণ গত ২৩ মার্চ, ২০২৩ তিনি অভিযুক্ত হয়েছেন এবং ভারতীয় সংবিধানের ধারা ১০২(১)(ই) এবং রিপ্রেসেন্টেসন অফ দ্য পিপলস অ্যাক্ট, ১৯৫১-এর ধারা ৮ অনুসারে তিনি যোগ্যতা হারিয়েছেন।
রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজের পর কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর এক ট্যুইট বার্তায় জানিয়েছেন, যে দ্রুততার সঙ্গে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তাতে তিনি হতবাক। আদালতের নির্দেশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এবং যখন এই নির্দেশের বিরুদ্ধে আপীল করার পদ্ধতিগত কাজ চলছে সেই সময় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা আমাদের গণতন্ত্রের অসুখ বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এক ট্যুইট বার্তায় বলা হয়েছে, "রাহুল গান্ধীর লোকসভার সদস্যপদ খারিজ করা হয়েছে। যিনি আপনার জন্য এবং দেশের জন্য রাস্তা থেকে সংসদ পর্যন্ত গণতন্ত্রকে বাঁচানোর জন্য লাগাতার লড়াই করেছে চলেছেন। সমস্ত ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও যে কোনো মূল্যে তিনি এই লড়াই জারি রাখবেন এবং সমস্ত বিষয়ে ন্যায়সঙ্গত ভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। লড়াই জারি থাকবে।"
বৃহস্পতিবার রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণার ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে কংগ্রেস হাইকমান্ড। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ‘কাপুরুষ, স্বৈরাচারী বিজেপি সরকার। রাহুল গান্ধী এবং বিরোধীরা তাঁদের (বিজেপির) কুকর্ম সামনে এনেছে এবং জেপিসির দাবি তুলেছে। কিন্তু, রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের শিকার হয়ে ইডি, পুলিশ পাঠাচ্ছে মোদী সরকার। রাজনৈতিক বক্তব্য নিয়ে মামলা চাপাচ্ছে। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’
বৃহস্পতিবার, সুরাতের আদালত কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর ২ বছরের কারাদণ্ডের সাজা শোনালেও, তাঁর জামিনও মঞ্জুর করেন বিচারপতি। একইসঙ্গে, কারাদণ্ডের নির্দেশের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য তাঁর সাজা ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে কর্ণাটকের কোলারে এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করতে গিয়ে ঋণ খেলাপিতে অভিযুক্ত পলাতক ব্যবসায়ী ললিত মোদী এবং নীরব মোদীর নাম ব্যবহার করে রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, 'সব চোরদের 'পদবী' মোদী কেন হয়?'
রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন গুজরাটের বিজেপি বিধায়ক পূর্নেশ মোদী। সেই মামলায় গতকাল রাহুল গান্ধীকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৯ এবং ৫০০ ধারার অধীনে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। এই ধারার অধীনে সর্বোচ্চ শাস্তি দুই বছরের জেল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন