হাথরসে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদপিষ্টের ঘটনায় নিহতদের কয়েকজনের পরিবারের সাথে দেখা করলেন রাহুল গান্ধী। তিনি জানিয়েছেন, নিহতদের পরিবারের সদস্যরা তাঁকে জানিয়েছেন, ওই অনুষ্ঠানে পর্যাপ্ত পুলিশ তো ছিলই না। সাথে প্রয়োজনীয় কোনও ব্যবস্থাই ছিল না।
গত ২ জুলাই উত্তরপ্রদেশের হাথরসে স্বঘোষিত ধর্মগুরু ভোলে বাবার সৎসঙ্গে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে ১২৩ জন পুন্যার্থির মৃত্যু হয়। আহত হন বহু। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করা ছাড়া এখনও কোনও মন্তব্য করেননি। নিহতদের পরিবারের সাথে দেখা করার তো দূরের কথা বৃহস্পতিবার অধিকাংশ সময় তিনি ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের সাথে কাটিয়েছেন। এই নিয়ে কটাক্ষ করেছিল কংগ্রেস। এরপর শুক্রবার ভোরেই নিহতদের পরিবারের সাথে দেখা করতে হাথরসের উদ্দেশ্যে রওনা দেন রাহুল গান্ধী। কংগ্রেস সাংসদের এই পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার হাথরস যাওয়ার পথে প্রথমে আলিগড়ে দাঁড়ান রাহুল। সেখানে নিহত শান্তি দেবী ও মঞ্জু দেবীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। এরপর হাথরস গিয়ে আরও কয়েকজন নিহতের পরিবারের সাথে দেখা করেন।
সাক্ষাতের পর নিহত শান্তিদেবীর ছেলে নীতিন কুমার বলেন, “আমি এবং মা একসাথেই সৎসঙ্গে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওখানে গিয়ে আলাদা আলাদা ভাবে বসি। আমি অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগেই বেরিয়ে আসি। তারপর শুনেছি পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছে।“
হাথরসে শোকাহত পরিবারের এক সদস্য সংবাদমাধ্যমে বলেন, “তিনি (রাহুল গান্ধী) আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে তিনি তাঁর দলের মাধ্যমে আমাদের সম্ভাব্য সব উপায়ে সাহায্য করবেন। সংসদে আমাদের হয়ে আওয়াজ তুলবেন। 'সৎসঙ্গ' অনুষ্ঠানস্থলে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা, পুলিশ কিছুই ছিল না। সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকলে আমার শ্যালিকাকে বাঁচানো যেত।“
রাহুল গান্ধী এক সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, “আমি এই মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘাটতি ছিল। এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এঁরা সকলেই দরিদ্র। এঁদের সর্বাধিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। আমি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে আন্তরিকভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। ক্ষতিপূরণ দেরিতে দিলে তা কারও উপকারে আসবে না। নিহতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আমি ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছি এবং তাঁরা আমাকে বলেছেন, সেখানে কোনো পুলিশি ব্যবস্থা ছিল না।“
রাহুল গান্ধীর সাথে কংগ্রেস সাংসদ দানিশ আলিও ছিলেন। তিনি বলেন, “প্রশাসন এই ঘটনার কোনো দায়িত্ব নিচ্ছে না। সরকারও এটিকে গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে না।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন