নেতৃত্বের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজস্থানের দায়িত্বভার থেকে সরে দাঁড়ালেন কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেন। সূত্রের খবর, গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে দলের অভ্যন্তরে যে কোন্দল তৈরী হয়েছে, তা নিয়ে যথেষ্ট বিরক্তি প্রকাশ করেছেন তিনি। মূলত তাঁর অভিযোগ, দলীয় নির্দেশ না মেনে যারা বিদ্রোহী নেতাদের প্ররোচনা দিয়েছেন দল তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
পদত্যাগ পত্রে মাকেন বলেছেন, "গত তিন প্রজন্ম ধরে আমরা কংগ্রেসের আদর্শ মেনে চলেছি। ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমি কংগ্রেস কর্মী হিসেবে সক্রিয় রাজনীতির সাথে যুক্ত। আমি সর্বদা রাহুলজীর একজন একনিষ্ঠ অনুগামী থাকব। যাঁকে আমি বিশ্বাস করি এবং ভরসা রাখি তাঁর প্রতিটা কথায়।"
প্রসঙ্গত, কংগ্রেস সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য উদগ্রীব ছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেলহট। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই মুখ্যমন্ত্রী পদে নিজের নাম বিবেচনার জন্য দলের কাছে অনুরোধ জানান কংগ্রেস নেতা শচীন পাইলট। দলের 'এক পদ নীতির' কারণে গেহলটকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বলা হয়। কিন্তু গেহলট তা করতে অস্বীকার করেন এবং অন্যদিকে তাঁর অনুগামী বিধায়করা হুঁশিয়ারি দেন অন্য কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করা হলে তাঁরা পদত্যাগ করবেন। এই নিয়ে অসন্তোষ তৈরী হয় দলের ভেতরে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুঙ্গে ওঠে গেহলট-পাইলট দ্বন্দ্ব। পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি বৈঠকের ডাক দেয় কংগ্রেস। কিন্তু সেই বৈঠকে যোগ দেননি গেহলট ঘনিষ্ঠ ৯০ জনের বেশি বিধায়ক। এর বদলে তাঁরা বিধানসভার স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র নিয়ে গিয়ে বলেন, অশোক গেহলটকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বহাল না রাখলে তাঁরা সকলেই পদত্যাগ করবেন।
সূত্র অনুসারে, এই ঘটনার পর মাকেন আশা করেছিলেন, বিদ্রোহী কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে দল অবশ্যই কোনও ব্যবস্থা নেবে। যদিও ২ মাস পেরিয়ে গেলেও কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি কংগ্রেস নেতৃত্ব। যার ফলে রাজস্থানের দায়িত্বভার থেকে সরে দাঁড়ালেন অজয় মাকেন।
মূলত যে তিন বিধায়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দলের কাছে মাকেন আর্জি জানিয়েছিলেন তাঁরা হলেন - মহেশ জোশী, ধর্মেন্দ্র রাঠোর এবং শান্তি ধারিওয়াল।
অন্যদিকে বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়কদের অভিযোগ, অশোক গেহলটকে রাজ্য থেকে সরিয়ে সচিন পাইলটকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসাতে চাইছেন মাকেন। মাকেনকে সরিয়ে ইনচার্জ পদে অন্য কাউকে আনার দাবি উঠেছিল দলের অন্দরেই। কিন্তু কংগ্রেস নেতৃত্ব মাকেনকেই ওই পদে বহাল রাখে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন