নির্বাচনের বাকি আর এক মাসের কিছু বেশি। তাই মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান-সহ পাঁচ রাজ্যে জোর কদমে প্রচার সারছে বিজেপি, কংগ্রেস ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি। সম্প্রতি রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে ভাজপা। আর সেই তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজস্থান বিজেপির অন্যতম প্রধান ‘খুঁটি’ বসুন্ধরা রাজে। শুধু রাজেই নন, মরুরাজ্যের প্রথম নির্বাচনী প্রার্থী তালিকায় জায়গা হয়নি রাজে ঘনিষ্ঠ একাধিক বিজেপি নেতারই। ভোটের ঠিক একমাস আগে টিকিট না পেয়ে দলের বিরুদ্ধে সেই ‘ব্রাত্য’দের প্রতিবাদ আরও উষ্ণতা বাড়াচ্ছে রাজস্থানের রাজনৈতিক মহলের।
প্রথম প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়ার পরও অবশ্য প্রকাশ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপরে এখনও পর্যন্ত কোনও ক্ষোভ প্রকাশ করেননি। বরং তালিকা থেকে বঞ্চিত তাঁর ঘনিষ্ঠরা বারবার দলের বিরুদ্ধে অসন্তোষ উগড়ে দিচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই ভাজপার তরফে টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ার কথা ভাবছেন বলে সূত্রে খবর। বঞ্চিতদের মধ্যে অন্যতম প্রধান হলেন রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ভারতের পূর্ব উপ-রাষ্ট্রপতি ভাইরন সিংহ শেখাওয়াতের জামাই নরপত সিংহ রাজভি।
জয়পুরের বিদ্যাধর নগর কেন্দ্র থেকে নরপত সিংহের জায়গায় গেরুয়া শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে প্রার্থী করা হয়েছে জয়পুরের ‘রাজকুমারী’ দিব্যা কুমারকে। ব্রিটিশ রাজের মধ্যেই জয়পুরের শেষ শাসক মহারাজা মেজর জেনারেল মান সিংহের নাতনি দিব্যা কুমার ২০১৩ সালে বিজেপিতে যোগ দিয়ে সাওয়াই মাধোপুর কেন্দ্র থেকে বিধানসভা নির্বাচনে জিতে বিধায়ক হন। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জিতে সাংসদ নির্বাচিত হন দিব্যা। তবে এবারের নির্বাচনে বিদ্যাধর নগর কেন্দ্র থেকে তাকে প্রার্থী করায় ব্যাপক চটেছেন নরপত সিংহ রাজভি। তিনি জানিয়েছেন, “যে পরিবার মুঘলদের সামনে আত্মসমর্পণ করেছে এবং মহারানা প্রতাপের বিরুদ্ধে লড়াইও করেছে, সেই পরিবারের প্রতি দল কেন এত দয়াবান বুঝি না।”
তবে রাজভির এই মন্তব্যের জবাবে সৌহার্দ্যের বার্তা দিয়েছেন দিব্যা কুমারী। এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, “ভাইরন সিংহ শেখাওয়াত আমার বাবার মতোই। আমি শুধু তাকে (রাজভি) বলতে চাই, আপনি আমার সঙ্গেই এই নির্বাচনে লড়াই করুন। আমায় আশীর্বাদ করুন, সমর্থন করুন।” ইতিমধ্যেই অবশ্য নরপত সিংহের সঙ্গে দিল্লি থেকে গিয়ে দেখা করেছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দিল্লির সঙ্গে কথা বলে নরপতকে চিত্তরগড় বা বিকানের কেন্দ্র থেকে টিকিট দেওয়া নিয়ে আশ্বস্ত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, বসুন্ধরা রাজে ‘ঘনিষ্ঠ’দের মধ্যে বাড়ছে দল বিরোধী প্রতিবাদ। ঝোটওয়ারা কেন্দ্র থেকে দলের টিকিট না পেয়ে ‘অখুশি’ রাজপাল শেখাওয়াত। সোমবার রাতে তিনি এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য রাজের সঙ্গে দেখা করেন বলেও খবর। আবার, নাগের কেন্দ্র থেকে টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ের ময়দানে নামার কথা ভাবছেন আরেক রাজে ঘনিষ্ঠ অনিতা সিংহ। ভোটের আগে মরুরাজ্যে বিজেপির অন্দরেই এধরণের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দলের জন্য একেবারেই সুফল আনবে না বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বরং টিকিট না পেয়ে ভাজপা নেতাদের স্বাধীন লড়াই বিজেপির ভোটবাক্সে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন