প্রায় ৩১ বছর বন্দীদশা কাটানোর পর এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অবশেষে মুক্তি পাচ্ছেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীর হত্যায় অভিযুক্ত এ.জি পেরারিভালন। ইতিপূর্বে ২০১৮ সালে, পেরারিভালানের সাজা মুকুব করার জন্য তামিলনাড়ু সরকারের দেওয়া সুপারিশ সত্ত্বেও তার মুক্তিতে বিলম্ব হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন পেরারিভালানের পরিবার। এবার তাকে মুক্তি দিল সুপ্রিম কোর্ট।
পেরারিভালন জেল থেকে মুক্তির আবেদনে লিখেছেন, "আমি ৩১ বছর ধরে জেলে বন্দি অবস্থায় রয়েছি। তাই আমায় এবার মুক্তি দেওয়া হোক।" ২০০৮ সালে তামিলনাড়ু মন্ত্রিসভা তার মুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল মন্ত্রিসভার সেই সিদ্ধান্তকে দেশের রাষ্ট্রপতির কাছে বিবেচনার জন্য পাঠান। সুপ্রিম কোর্ট এই মামলাটি স্থগিত রাখে। পেরারিভালনের মুক্তির মামলা থমকে ছিল অনেকদিন।
উল্লেখ্য, এ.জি পেরারিভালান ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যার সময় তার ১৯ বছর বয়স ছিল। তার বিরুদ্ধে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ ছিল। রাজীব হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত বোমাটিতে ব্যবহৃত দুটি ৯ ভোল্ট ব্যাটারি কেনার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯৯৮ সালে টাডা মামলায় আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। সুপ্রিম কোর্ট পরের বছর সাজা বহাল রাখলেও ২০১৪ সালে তা বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। পেরারিভালনের উকিল সওয়াল করেছেন, তার মক্কেল সর্বমোট ৩৬ বছর জেলে বন্দীদশা কাটিয়েছেন। তার আচরণ নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই কোর্ট তরফে। তাকে এবার মুক্তি দেওয়া উচিত।
বুধবার সুপ্রিম কোর্ট রাজীব হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত পেরারিভালনকে মুক্তির আদেশ দেয় ও ঘোষণা করেন, তামিলনাড়ু মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত মেনেই মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছেন রাজ্যপাল। ঐদিন পেরারিভালানের মুক্তির আদেশ দেওয়ার পর, তার মা অর্পুথাম্মল, তামিল মুখ্যমন্ত্রী এম.কে স্টালিনকে ও অন্যান্য নেতা-মন্ত্রীদের ধন্যবাদজ্ঞাপন করেছেন।
সুপ্রিম কোর্ট রাজীব গান্ধী হত্যার দোষী এ.জি পেরারিভালানের মুক্তির আদেশ দেওয়ার পরে, তার পরিবারকে জোলারপেট্টাইতে তাদের বাসভবনের বাইরে উদযাপন করতে এবং মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা গেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন