মহিলা কুস্তিগীরদের যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের পাশে দাঁড়িয়েছে উত্তরপ্রদেশের রাজপুত সম্প্রদায়।
ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্নে কুস্তিগীর-কৃষক নেতাদের দেওয়া সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামী ৯ জুন। তার আগেই অভিযুক্ত ব্রিজভূষণের হয়ে আসরে নেমে পড়েছে রাজপুত বিকাশ সমিতি (The Rajput Vikas Samiti)।
ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত কুস্তিগীরদের চলমান প্রতিবাদকে খাপ পঞ্চায়েত যেভাবে সমর্থন জানিয়েছে, তারও বিরোধিতা করেছে রাজপুত সমিতি। খাপের বিরোধিতা করে RVS জানিয়েছে, ‘সংবিধান ও আইনের মাধ্যমে দেশ পরিচালিত হয়, খাপ পঞ্চায়েতের মাধ্যমে নয়।’
সূত্রের খবর, ব্রিজভূষণকে সরাসরি সমর্থন জানিয়েছেন রাজপুত বিকাশ সমিতির সভাপতি রাজেশ চৌহান। তাঁর নেতৃত্বেই সোমবার, বাগপত জেলা শাসক জিতেন্দ্র প্রতাপ সিংয়ের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন সমিতির ৭০-৮০ জন সদস্যের প্রতিনিধি দল। জানা যাচ্ছে, এই স্মারকলিপিটি পাঠানো হবে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে।
রাজেশ চৌহান বলেন, ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার আগে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সঠিকভাবে তদন্ত করা উচিত। তিনি জানান, ‘আমরা কুস্তিগীরদের সমর্থনে দাঁড়িয়েছি, কিন্তু এই ইস্যুতে খাপগুলি যেভাবে রাজনীতি করছে আমরা তার তীব্র নিন্দা করছি।’
রাজপুত বিকাশ সমিতির সহ-সভাপতি অশোক চৌহান বলেছেন, এই খাপ পঞ্চায়েতে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলি বেআইনি এবং অনৈতিক৷ তিনি বলেন, ‘বেশ কয়েকবার দেখা গেছে, শুধুমাত্র রাজনৈতিক লাভের জন্য নিজেদের প্ল্যাটফর্মের অপব্যবহার করার চেষ্টা করেছেন খাপ পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা।’
‘এমনকি কেন্দ্রের নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের প্রতিবাদের সময়েও হস্তক্ষেপ করেছিল খাপেরা। যার জেরে আন্দোলনকারী ও সরকারের মধ্যে সমঝোতায় পৌঁছাতে দীর্ঘ সময় লেগেছিল।’ খাপ পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে এদিন এই দাবিও করেন অশোক চৌহান।
প্রসঙ্গত, আন্দোলনরত কুস্তিগীরদের পাশে দাঁড়িয়ে গত ৩০ মে, উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগরের সোরাম গ্রামে 'মহাপঞ্চায়েত’-এর ডাক দেন কৃষক নেতা তথা বলিয়ান খাপের প্রধান নরেশ টিকাইত। তারপরেই, ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে ‘আল্টিমেটাম’ দেন কুস্তিগীর, কৃষক নেতা তথা খাপ পঞ্চায়েতের প্রধানেরা। তা নিয়েই এদিন সমালোচনা করেছে রাজপুত সমিতির নেতারা।
এদিকে, কুস্তিগিরদের সমর্থনে কৃষক সমাজ এগিয়ে আসায় প্রমাদ গুনেছে বিজেপি নেতৃত্ব। বিশেষ করে সামনেই রাজস্থান ও তার পরে হরিয়ানায় বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। এই আবহে জাঠ কৃষক সমাজ মুখ ঘুরিয়ে নিলে ভোটে ভরাডুবির আশঙ্কা রয়েছে বিজেপির। কুস্তিগীরদের পাশ থেকে কৃষক সমাজ ও খাপ পঞ্চায়েতকে সরাতে, বিজেপির নয়া চাল কি রাজপুতরা? সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে বিভিন্ন মহলে।
-With IANS Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন