আর্থিক দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের (PMLA) অধীনে আগেই সাংবাদিক রানা আইয়ুবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বৃহস্পতিবার, সেই মামলায় আইয়ুবের বিরুদ্ধে একটি প্রসিকিউশন অভিযোগ (চার্জশিট) দায়ের করেছে ইডি।
অভিযোগ, ২০২০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে দান করার উদ্দেশ্যে ketto.com ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ২.৬৯ কোটিরও বেশি টাকা সংগ্রহ করেন আইয়ুব। কিন্তু, সেই তহবিলের অপব্যবহার করেছেন তিনি। ইডি দাবি করেছে, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বেআইনিভাবে তহবিল সংগহ করেছিলেন আইয়ুব।
ইডি-র চার্জশিট প্রসঙ্গে এক ট্যুইট বার্তায় আইয়ুব জানিয়েছেন, আমার কলম কখনই স্তব্ধ হবে না। পরিহাসের বিষয় এটাই যে, ভারতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার উপর আক্রমণের বিষয়ে আমি গতকালই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি সেমিনার পরিচালনা করেছি। দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমি সোচ্চারে আমার বক্তব্য জানাব। আমাকে সব জানাতে হবে।
উল্লেখ্য, ইডির চার্জশিটে বলা হয়েছে, ‘কেটোতে (ketto) মোট ২ কোটি ৬৯ লক্ষ ৪৪ হাজার ৬৮০ টাকার তহবিল সংগ্রহ করেছিলেন রানা আইয়ুব। এই তহবিলগুলি তার বোন/বাবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে তোলা হয়েছিল। এই মধ্যে ৭২ লক্ষ ১ হাজার ৭৮৬ টাকা তিনি নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে তুলেছেন। এছাড়া, তাঁর বোন ইফফাত শেখের অ্যাকাউন্টে তোলা হয়েছে ৩৭ লক্ষ ১৫ হাজার ৭২ টাকা। তাঁর বাবা মহম্মদ আইয়ুব ওয়াকিফের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ৬০ লক্ষ ২৭ হাজার ৮২২ টাকা তোলা হয়েছিল। পরবর্তীতে তাঁর বোন ও বাবার অ্যাকাউন্ট থেকে এই তহবিল রানা আইয়ুবের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হয়।’
চার্জশিটে আরও বলা হয়েছে, ‘মোট ৩১ লক্ষ ১৬ হাজার ৭৭০ টাকার ব্যয়ের তথ্য/নথিপত্র জমা দিয়েছেন রানা আইয়ুব। তবে দাবিকৃত ব্যয় যাচাই করার পর, জানা গেছে প্রকৃত ব্যয় ছিল ১৭ লক্ষ ৬৬ হাজার ৯৭০ টাকা।’
‘কিছু সংস্থার নামে ভুয়ো বিল পাওয়া গেছে, যেগুলি ত্রাণ কাজে ব্যয় দেখানোর জন্য তৈরি করেছিলেন আইয়ুব। এছাড়া, বিমানে ব্যক্তিগত যাতায়াতের জন্য খরচের হিসাব, ত্রাণ কাজের ব্যয় হিসাবে দাবি করা হয়েছে।’
অনুসন্ধানে জানা গেছে, তহবিল ত্রাণ কাজে ব্যবহারের পরিবর্তে একটি পৃথক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কিছু তহবিল পার্ক করেন রানা আইয়ুব। তিনি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম Ketto-থেকে পাওয়া টাকা থেকে ৫০লক্ষের একটি স্থায়ী আমানত তৈরি করেছিলেন। পরবর্তীতে ত্রাণকাজের জন্য এইগুলি ব্যবহার করা হয়নি।
তদন্ত মারফর ইডি জানতে পেরেছে যে, 'পি এম কেয়ারস ফান্ড এবং সিএম ত্রাণ তহবিলে মোট ৭৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জমা করেছেন আয়ুব।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন