বিলকিস বানো ধর্ষণ মামলায় বিরোধীদের ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়লো বিজেপি। ১৫ আগস্ট এই ধর্ষণ মামলায় ১১ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে রি-মিশন নীতির অধীনে মুক্তি দিয়েছে বিজেপি শাসিত গুজরাট সরকার। এই ঘটনায় বিলকিস বানো, তাঁর পরিবারের পাশাপাশি বিস্মিত গোটা দেশ।
২০০২ সালের ৩ মার্চ আহমেদাবাদের কাছে রন্ধিকপুর গ্রামে নৃশংস ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন বিলকিস বানো, সেইসময় তিনি ২১ বছরের ছিলেন এবং পাঁচ মাসের গর্ভবতী ছিলেন। বিলকিস বানোর ৩ বছরের মেয়ে সহ তাঁর পরিবারের ৭ জনকে হত্যা করা হয়েছিল।
এই ঘটনায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১১ জন আসামীকে সোমবার গোধারা জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, জেল থেকে বেরোনোর পর মালা পরিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছে, মিষ্টিমুখ করানো হয়েছে।
বিলকিস বানোর স্বামী ইয়াকুব রসুল সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, "আমরা খুব অবাক এই ঘটনায়। আমরা জানিনা দোষীরা কখন মুক্তির আবেদন করেছে এবং কোন রায়ের ভিত্তিতে রাজ্য সরকার এটা বিবেচনা করেছে। আমরা কখনও এই বিষয়ে কোনও নোটিশ পাইনি।"
লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে নারীশক্তির প্রসংশা এবং নারীদের সম্মান করার বার্তা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই ধর্ষণে সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে মুক্তি দিয়েছে বিজেপি শাসিত গুজরাট সরকার। এই ঘটনায় নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করে বিরোধীরা বলেছে, "এটাই বিজেপি-নেতৃত্বাধীন নতুন ভারতের আসল চেহারা।"
কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, "গুজরাটের বিজেপি সরকার বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলায় ১১ জন আসামীকে মুক্তি দিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত বিজেপি সরকারের মানসিকতা প্রকাশ করে। লালকেল্লায় প্রধানমন্ত্রী নারী নিরাপত্তা, নারীশক্তি, নারীর সম্মান নিয়ে বড় বড় কথা বলেছেন। এর কয়েক ঘণ্টা পরই গুজরাট সরকার ধর্ষণে দোষীদের ছেড়ে দিয়েছে। এমনকি জেল থেকে বেরোনোর পর তাদের মালা পরিয়ে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়েছে। এটাই কি অমৃত মহোৎসব?"
সিপিআইএমের তরফ থেকে একটি টুইট বার্তায় এই ঘটনার নিন্দা করে বলা হয়, "এটাই হলো নতুন ভারতের আসল চেহারা। দোষী সাব্যস্ত খুনি এবং ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং সমাজকর্মী তিস্তা শীতলাবাদ, যিনি ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করেছিলেন তিনি জেলে বন্দী রয়েছেন।"
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী টুইটারে লেখেন, "৫ মাসের গর্ভবতী মহিলাকে ধর্ষণ এবং তাঁর তিন বছরের মেয়েকে যারা হত্যা করেছে, তারা 'আজাদী কা অমৃত মহোৎসব' চলাকালীন মুক্তি পেয়েছে। নারীশক্তি নিয়ে মিথ্যে ভাষণ দেওয়া ব্যক্তি এর মাধ্যমে দেশের নারীদের কী বার্তা দিচ্ছেন? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার কথা আর কাজের মধ্যে পার্থক্য আজনগতা দেশ দেখছে।"
বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি, তৃণমূল কংগ্রেসও।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন