২০২১ সাল শেষ। গত ১২ মাসের হিসাবে একশোরও বেশি বাঘ মারা গিয়েছে দেশে, যা গত এক দশকের রেকর্ড। এমনই পরিসংখ্যান দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা জাতীয় ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ (NTCA)। ২০১২ সাল থেকে ভারতে বাঘের সংখ্যা ও মৃত্যু সংক্রান্ত বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত পরিসংখ্যান বলছে এই বছরে মৃত বাঘের সংখ্যা ১২৬টি, যা গত ১০ বছরে বার্ষিক মৃত্যুর সংখ্যার রেকর্ড ছাড়িয়ে গিয়েছে। ২০১৬ সালে ভারতে ১২১টি বাঘের মৃত্যু হয়েছিল। সেটাই সর্বোচ্চ ছিল এত দিন। সেই সংখ্যাও পেরিয়ে গেল এবার।
আর রাজ্যভিত্তিক হিসাব ধরলে বাঘের মৃত্যুতে সবার শীর্ষে আছে টাইগার স্টেট মধ্যপ্রদেশ। সেরাজ্যে গত ১২ মাসে মৃত্যু হয়েছে ৪১টি বাঘের। তারপরেই আছে মহারাষ্ট্র। ২৫টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে সেখানে। এরপর রয়েছে কর্ণাটক এবং উত্তরপ্রদেশে, সেখানে যথাক্রমে ১৫টি এবং ৯টি বাঘের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
২০১৮ সালের সুমারিতে ভারতের জঙ্গলগুলিতে ২,৯৬৭টি বাঘের অস্তিত্বের কথা জানা যায়। ১২৬টি বাঘের মৃত্যু সত্ত্বেও চলতি বছর সেই সংখ্যা ৩,০০০ পেরিয়ে গিয়েছে বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের। প্রসঙ্গত, পৃথিবীজুড়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে যত সংখ্যক বাঘ রয়েছে, তার ৭৫ শতাংশই রয়েছে ভারতের জঙ্গলগুলিতে।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাওয়া তথ্য নিয়ে তৈরি হয়েছে রিপোর্ট। সেই সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এত সংখ্যক বাঘের মৃত্যুর পিছনে অনেক কারণ রয়েছে। চোরাশিকার, সড়ক দুর্ঘটনা, লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় গণপিটুনি, প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে মৃত্যু হয়েছে বাঘের। এর মধ্যে শুধু চোরাশিকারিদের গুলি, ফাঁদ ও বিষ প্রয়োগেই ৬০টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। তবে এই মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি বলে মনে করেন বাঘ সংরক্ষণের সঙ্গে জড়িত বনবিভাগের এক কর্তা। তিনি বলেন, ‘দুর্গম, গভীর জঙ্গলে প্রাকৃতিক কারণে কোনও বাঘের মৃত্যু হলে নজর এড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে অনেক ক্ষেত্রেই।’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন