মাংস খাওয়ার জন্য হিমাচলপ্রদেশে ব্যাপক পরিমাণে ধস ও লাগামছাড়া বৃষ্টি হয়েছে! IIT মাণ্ডির ডিরেক্টরের এই মন্তব্য নিয়ে সম্প্রতি তৈরি হয়েছে চরম বিতর্ক। শুধু তাই নয়, নিজের ছাত্রদের দিয়ে মাংস না খাওয়ার প্রতিজ্ঞাও করিয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় সিপিআই(এম)-র তরফ থেকে আইআইটি মাণ্ডির ডিরেক্টরের পদত্যাগ ও নিঃশর্ত ক্ষমার দাবি জানানো হয়েছে।
গত সপ্তাহেই সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ হয় যেখানে IIT মাণ্ডির প্রধান ডঃ লক্ষ্মীধর বেহেরাকে তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলতে শোনা যায়, “যদি আমরা এই মুহূর্তে প্রাণী হত্যা বন্ধ না করি, তাহলে হিমাচলপ্রদেশ আরও পতন দেখবে। এখানে নিরীহ প্রাণীদের নৃশংসভাবে মেরে ফেলা হচ্ছে। প্রকৃতির অবনতির সঙ্গে এর একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। হয়তো আপনারা এখন সেটা দেখতে পাচ্ছেন না, কিন্তু সেটা সত্যিই আছে।” বেহেরার আরও বক্তব্য ছিল, “এখন ধস, মেঘভাঙ্গা বৃষ্টি-সহ আরও অনেক কিছুই বারবার করে হচ্ছে। এগুলো সবই প্রাণীদের প্রতি আমাদের নিষ্ঠুরতার প্রভাবে হচ্ছে।”
এরপর পড়ুয়াদের দিয়ে মাংস না খাওয়ার প্রতিজ্ঞাও করাতে দেখা গিয়েছে ওই অধ্যাপককে। তিনি পড়ুয়াদের বলেন, “ভালো মানুষ হতে গেলে কী করতে হয়? মাংস খাওয়া থেকে নিজেকে প্রতিহত করতে হয়।”
এই গোটা ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই IIT মাণ্ডির প্রধানের বক্তব্য নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক, উঠেছে হাসির রোল। ওয়াকিবহাল মহলে প্রশ্ন, দেশের এতবড় বৈজ্ঞানিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান হয়ে প্রকৃতির রোষের পিছনে কীভাবে পশু-পাখির উপরে হওয়া অত্যাচারকে কারণ হিসেবে দর্শাতে পারেন তিনি?
রবিবার IIT মাণ্ডির প্রধানকে সরাসরি চিঠি লিখে হিমাচলপ্রদেশ সিপিআই(এম)-এর রাজ্য সম্পাদক ওঙ্কার শাদ জানিয়েছেন, “এতে কোনও সন্দেহ নেই যে দেশের একটি অভিজাত বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তি বিষয়ক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকার পরেও আপনার এইরকমের অবৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। হিমাচলের মানুষ কয়েক শতাব্দী ধরে মাংস খাচ্ছেন। কিন্তু এই পরিমাণে ধস ও বৃষ্টি আগে কেন হয়নি?” বেহেরার মন্তব্যকে চিঠিতে ‘অবৈজ্ঞানিক এবং পেশাগত মূল্যবোধ ও নৈতিকতার বিরোধী বলেও উল্লেখ করেছেন বাম নেতা। পাশাপাশি, পড়ুয়াদের উপর ব্যক্তিগত মতামত চাপিয়ে দেওয়া ও তাঁদের দিয়ে মাংস না খাওয়ার প্রতিজ্ঞা করানোকে ‘অপেশাদার আচরণ’ বলেও দাবি করেছেন শাদ। হিমাচলের সিপিআই(এম)-এর তরফে ওই চিঠির কপি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রীকেও পাঠানো হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন