সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় প্ররোচনামূলক মন্তব্য করার অভিযোগে মামলা রুজু হল মহারাষ্ট্রের এক হিন্দুত্ববাদী সংবাদমাধ্যমের খ্যাতনামা সঞ্চালক সুরেশ চাহ্বণকে-এর বিরুদ্ধে। একইসঙ্গে এবং একই অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে দুই বজরং দল নেতার নামেও।
মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর জেলার সঙ্গমনর এলাকায় গত ৬ জুন হিন্দু সমাজের উদ্যোগে একটি র্যালির আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই সুরেশ চাহ্বণ এবং যোগেশ মনোহর সূর্যবংশী ও বিশাল ভগবান ওয়াকচৌরে নামের বজরং দল ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দুই নেতার নামে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ‘সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক ভাষণ’ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে অবশেষে ২১ জুন সঙ্গমনর থানায় এফআইআর দায়ের হয়েছে।
সঙ্গমনর বিধানসভা আসন গত বেশ কয়েক দশক ধরে কংগ্রেসের অধীনে রয়েছে। বর্তমানেও সঙ্গমনরের বিধায়ক রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বালাসাহেব থোরাট। ১৯৮৫ সালের পর থেকে এখনও পর্যন্ত টানা অষ্টমবারের জন্য বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এরকম এলাকায় গত ৬ জুন একটি হিন্দুত্ব র্যালির আয়োজন করা হয়েছিল। দায়ের হওয়া এফআইআর-এর বয়ান থেকে জানা গিয়েছে, “বেশ কিছু সময় ধরে সঙ্গমনরে ‘হিন্দু বিরোধী’ ঘটনা বেড়েই চলেছে। গত ২৫ মে, হিন্দু ধর্মাবলম্বী ৮ ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল কিছু মুসলিমের বিরুদ্ধে। হিন্দুদের বিরুদ্ধে বেড়ে চলা অত্যাচারের প্রতিবাদেই সকল হিন্দু পরিষদের পক্ষ থেকে গত ৬ জুন একটি র্যালির আয়োজন করা হয়েছিল। সেই র্যালি থেকে উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়েছে অভিযুক্তরা। তাদের এই ভাষণ দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের কারণ হতে পারে। এছাড়াও, র্যালি পরিচালনা নিয়ে পুলিশের বেঁধে দেওয়া একাধিক শর্তাবলী ও সুপ্রিম কোর্টের নিয়মবিধিও লঙ্ঘন করা হয়েছে।”
সরকারের পক্ষ থেকে এফআইআর’টি করেছেন সঙ্গমনর থানার সাব-ইন্সপেক্টর বালাসাহেব মধুকর যাদব। গত ৬ জুন তিনি সকল হিন্দু পরিষদের ওই র্যালির নিরাপত্তার দায়িত্বে মোতায়েন ছিলেন। সূত্রের খবর, হিন্দুত্ববাদী সংবাদমাধ্যম ‘সুদর্শন নিউজ’-এর সঞ্চালক তথা সম্পাদক সুরেশ চাহ্বণ ও দুই বজরং দলের নেতার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩এ, ৩৪ এবং ৫০৫(২) নং ধারায় মামলা দায়ের করা করা হয়েছে।
সুরেশ চাহ্বণ ওই র্যালি থেকে ‘লাভ জিহাদ’ নিয়ে ভাষণ দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছেন। এমনকি সঙ্গমনর ভবিষ্যতে ‘পাকিস্তান’-এ পরিণত হয়ে যেতে পারে বলেও জানান তিনি। এছাড়াও, বাঁচতে হলে হিন্দু ছেলেদের মুসলিম ধর্মাবলম্বী মেয়েদের বিয়ে করে নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই র্যালি আর ভাষণের পর থেকে সঙ্গমনর এলাকায় সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়িয়ে পরে এবং সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগে ১৭ জনকে গ্রেফতারও করা হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন