দীর্ঘ চার বছর পর পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্টে হরিয়ানার বিজেপি সরকার জানালো স্কাইলাইট হসপিটালিটি থেকে গুরুগ্রামের ডিএলএফ ইউনিভার্সাল লিমিটেড-এ জমি হস্তান্তরের সময় কোনো নিয়ম ভাঙা হয়নি। উল্লেখ্য গত চার বছর আগে এই ঘটনায় বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা ভূপিন্দর সিং হুডাকে প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, প্রাক্তন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর জামাই রবার্ট বঢরা স্কাইলাইট হসপিটালিটির ডিরেক্টর ।
এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা ভূপিন্দর সিং হুডা জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল তা প্রমাণ হয়ে গেল। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হুডা জানান, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল। এই প্রসঙ্গে বর্তমানে এছাড়া আমি আর কিছু বলতে চাই না। বিচার ব্যবস্থার ওপর আমার সম্পূর্ণ আস্থা আছে।
প্রসঙ্গত, কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট বঢরার সংস্থার সঙ্গে এই চুক্তির সময় হরিয়ানাতে ক্ষমতাসীন ছিল কংগ্রেস সরকার এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ভূপিন্দর সিং হুডা। পরবর্তী সময়ে এই জমি হস্তান্তর নিয়ে সরগরম হয়ে ওঠে রাজনৈতিক মহল।
২০১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর রবার্ট বঢরা, ভূপিন্দর সিং হুডা, ওঙ্কারেশ্বর প্রপার্টিস লিমিটেড এবং স্কাইলাইট হসপিটালিটির বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র এবং দুর্নীতির অভিযোগ এনে গুরুগ্রামের খেকরি দৌলা পুলিশ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এঁদের বিরুদ্ধে ধারা ৪২০ (প্রতারণা এবং অসাধুভাবে সম্পত্তি বিতরণে প্ররোচিত করা), ধারা ৪৬৭ (মূল্যবান নিরাপত্তা জালিয়াতি), ধারা ৪৬৮ (প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি), ধারা ৪৭১ (জাল নথি বা ইলেকট্রনিক রেকর্ডকে আসল হিসাবে ব্যবহার করা) এবং ১২০-বি-এর (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ১৩ ধারা (একজন সরকারী কর্মচারী দ্বারা অপরাধমূলক অসদাচরণ) অনুসারে মামলা করা হয়।
হরিয়ানার ন্যু জেলার রথিভাস জেলার বাসিন্দা, জনৈক সুরিন্দর শর্মার অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করা হয়। এই সম্পর্কিত ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শর্মা অভিযোগ করেছিলেন যে রবার্ট বঢরা "প্রভাবশালী নির্মাতা, মন্ত্রী এবং শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে মিলে ষড়যন্ত্র, তাদের পদের অপব্যবহার এবং ৫,০০০ কোটি টাকার কেলেঙ্কারী করেছেন।"
২০১৪-র অক্টোবরে হরিয়ানায় বিধানসভা ভোটের প্রচারে গিয়ে ‘সনিয়া গান্ধীর জামাইয়ের’ বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওই বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসে বিজেপি।
এর কয়েক বছর পরে রবার্ট বঢরা এবং ভূপিন্দর সিং হুডার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্তে নামে মনোহর লাল খট্টরের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের পুলিশ।
রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে কংগ্রেস জানিয়েছিল, যাবতীয় স্ট্যাম্প ডিউটি দিয়েই ২০০৮ সালে বাণিজ্যিক এলাকায় সাড়ে তিন একরের জমি কিনেছিল রবার্ট-এর সংস্থা। এরপর লাইসেন্স পায় এবং ২০২০ সালে জমির কর মিটিয়ে ডিএলএফ সংস্থাকে বিক্রি করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় কোনো অনিয়ম হয়নি। শুক্রবার তা কার্যত স্বীকার করে নিল মনোহর লাল খট্টরের নেতৃত্বাধীন হরিয়ানার বিজেপি সরকার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন