টেলিভিশনে ‘বিদ্বেষ মূলক’ বক্তব্য রোধে সঞ্চালক বা অ্যাঙ্করের ভূমিকা ‘খুব গুরুত্বপূর্ণ’। এমনটাই মনে করছে সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার, বিচারপতি কে এম জোসেফ এক পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, ‘মূলধারার মিডিয়া বা সোশ্যাল মিডিয়াতে ‘বিদ্বেষ মূলক’ বক্তৃতাগুলি অনিয়ন্ত্রিত। কেউ যাতে ঘৃণাত্মক বক্তব্য রাখতে না পারে, তা দেখার দায়িত্ব অ্যাঙ্করদের। আলোচনার ক্ষেত্রে কোথায় থামতে হবে, থামাতে হবে- তা জানা উচিত সকলের।’
শুধু তাই নয়, টেলিভিশনে বিদ্বেষ মূলক, ঘৃণাত্মক বক্তব্য প্রচার রুখতে সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি জানতে চান, এব্যাপারে সরকার কেন ‘নীরব দর্শক’-এর ভূমিকা পালন করছে?
পর্যবেক্ষণে আদালত জানিয়েছে, ‘ঘৃণা সূচক বক্তব্য আসলে কাউকে হত্যা করার মতো বিষয়। এটি আপনি একাধিক উপায়ে করতে পারেন। ধীরে ধীরে বা অন্যভাবে।’ কেন ঘৃণা সূচক বক্তব্য দর্শকদের আগ্রহের বিষয় করে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে শীর্ষ আদালত।
আদালত জানিয়েছে, ‘এব্যাপারে, প্রতিপক্ষের মতো অবস্থান নেওয়া উচিত নয় বরং আদালতকে সহায়তা করা উচিত সরকারের।’ ঘৃণাত্মক বক্তৃতাগুলি আটকাতে সক্রিয় না হওয়ার জন্যেও ইন্টারনেট কোম্পানিগুলিরও সমালোচনা করেছে দেশের শীর্ষ আদালত।
এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে ২৩ নভেম্বর। আদালত কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জানতে চাইবে, টেলিভিশনে ঘৃণা সূচক বক্তব্য রোধে আইন কমিশনের সুপারিশগুলিকে কার্যকর করা হবে কিনা।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৭ সালে নির্দিষ্ট আইনের সুপারিশ করে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল আইন কমিশন। যে প্রতিবেদনে আইন কমিশন জানিয়েছিল, ‘ভারতের কোনও আইনে ঘৃণা সূচক বক্তৃতা সংজ্ঞায়িত করা হয়নি। তবে, কিছু আইনে বাক স্বাধীনতার বিপরীতে বাকপ্রকাশের কয়েকটি ফর্ম (Form)-কে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’ একইসঙ্গে, আইন কমিশন একটি খসড়া আইনের কথা সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, নতুন ধারা ১৫৩-সি (153C) (বিদ্বেষ প্ররোচনা নিষিদ্ধ) এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৫-এ ধারা।
প্রায়শই, সন্ধ্যাকালীন সময়ে টিভি শো বিতর্কের ভিডিও ক্লিপ (Video Clip) সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়, যেখানে আমন্ত্রিত ব্যক্তিদের উস্কানিমূলক বা বিতর্কিত মন্তব্য করতে দেখা যায়। যার জেরে বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন