আসামে শাক-সবজির মূল্যবৃদ্ধির জন্য বাঙালি মুসলিম সম্প্রদায়কে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা। ঘৃণাসূচক মন্তব্য ছড়ানোর অভিযোগে হেমন্ত বিশ্ব শর্মার বিরুদ্ধে দিসপুর থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন রাজ্যসভার সাংসদ অজিত ভূঁইয়া।
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। মুখ্যমন্ত্রী ‘সাম্প্রদায়িক বিভেদ’-এর রাজনীতি করছেন বলে কটাক্ষ করেছেন অল ইন্ডিয়া ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের প্রধান বদরুদ্দিন আজমল। অন্যদিকে, আজমল ও হেমন্ত শর্মা দুজনের বিরুদ্ধেই আসামের সাধারণ মানুষকে ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজনের তোপ দেগেছে আসাম কংগ্রেস।
গত ১৩ জুন আসামে শাক-সবজির ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধির জন্য বাঙালি মুসলিম সম্প্রদায়কে দায়ী করেন হেমন্ত বিশ্ব শর্মা। উত্তর-পূর্ব ভারতের আসামে সাধারণত ‘মিঞা’ বলে পরিচিত বাঙালি মুসলিম ব্যবসায়ীদের ঘাড়ে যাবতীয় মূল্যবৃদ্ধির দোষ চাপিয়ে তিনি বলেন, “গ্রামের দিকে সাধারণত শাক-সবজির দাম কমই থাকে। কিন্তু গুয়াহাটির বাজারে মিঞা ব্যবসায়ীরা শাক-সবজি বিক্রি করলেই দাম বাড়িয়ে দেন। এখানে আমাদের নিজস্ব আসামবাসী ব্যবসায়ীরা হলে তাঁরা কখনই নিজেদের মানুষের থেকে এত দাম নিতেন না।” এর পাশাপাশি তিনি আসামের যুব সম্প্রদায়কে আরও বেশি পরিশ্রম করে ‘মিঞা’ ব্যবসায়ীদের টক্কর দেওয়ার বার্তা দিয়েছেন।
হেমন্ত বিশ্ব শর্মার এই মন্তব্য়ের তীব্র নিন্দা জানিয়ে অল ইন্ডিয়া ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের প্রধান বদরুদ্দিন আজমল বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরণের কথা সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টি করছে। এতে মিঞা সম্প্রদায়ের মানুষ ব্যথিত হচ্ছেন। এই মন্তব্যের জন্য যদি আসামে কোনওরকমের সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ায়, তাহলে তার জন্য দায়ী থাকবেন হেমন্ত বিশ্ব শর্মা ও তাঁর সরকার।” যদিও হেমন্ত ও আজমল, দুজনের মন্তব্যকেই কটাক্ষ করছেন আসাম কংগ্রেসের সভাপতি ভূপেন কুমার বোরহা। তিনি জানিয়েছেন, “নির্বাচন যত কাছে এগিয়ে আসছে, দুজনেই (হেমন্ত ও আজমল) তত মানুষকে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করে দিতে চাইছেন।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, “বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, সীমান্তবর্তী এলাকায় বেআইনি অভিবাসনের মতো রাজ্যের প্রধান সমস্যাগুলির কোনও সমাধান দিতে পারেনি বিজেপি সরকার। তাই এখন সেদিক থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতেই এসব নতুন নতুন কৌশল বের করেছে।” অন্যদিকে, রাইজর দলের সভাপতি তথা বিধায়ক অখিল গগোইও একই অভিযোগ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “বিজেপি আসামের নয়া সীমানা আঁকার খসড়া প্রস্তাব দিয়েছিল। এবং ওই প্রস্তাব মোটেও আদিবাসীদের জন্য সুখকর নয়। বিরোধীরা সেই খসড়া প্রস্তাবের নথি সাধারণ মানুষের সামনে নিয়ে এসেছে বলেই এখন ওরা সেটার থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতে চাইছে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন