গতকাল থেকে ত্রিপুরায় বিজেপি কর্মীরা যে সন্ত্রাস চালাচ্ছে, অবিলম্বে সেই হিংসা বন্ধ না হলে বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্যের সিনিয়র বিজেপি নেতা তথা আরএসএসের প্রতিনিধি চন্দন দে। এছাড়াও আরো তিন বিজেপি নেতা ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। গতকালের হিংসার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত একজনকেও গ্রেফতার করা হয়নি বলে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছে পুলিশ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে চন্দন দে-কে প্রশ্নকর্তার উদ্দেশ্যে (মনে করা হচ্ছে উনি একজন সাংবাদিক) বলতে দেখা গেছে, "আমি অ্যাডভোকেট চন্দন দে, ভারতীয় জনতা পার্টির সিনিয়র নেতা এবং আরএসএসের প্রতিনিধি। আমি বলছি আর কোনো বাড়ি যদি পোড়ে তাহলে কাল থেকে সারা ত্রিপুরাতে আগুন জ্বলবে। আমি পাল্টা আন্দোলন শুরু করবো।"
ভিডিওতে ওই ব্যক্তি বিপ্লব দেব শাসিত বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। ভারতীয় জনতা পার্টিকে কটাক্ষ করে ভারতীয় জঞ্জাল পার্টি বলেছেন তিনি। ভিডিওতে তিনি বলেছেন, ত্রিপুরার জনগণ 'বর্রব' বিপ্লব দেবের সরকারের ওপর বীতশ্রদ্ধ।
ভিডিওতে দেখানো হয়েছে ওই ব্যক্তি যেখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন তাঁর আশেপাশের বাড়ি জ্বলছে। বিজেপির কর্মীরা এই আগুন লাগিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁর আরও অভিযোগ, ফায়ার সার্ভিস এসে ঘটনাস্থল দেখেই ফিরে গেছে। আগুন নেভানোর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। পুলিশও নীরব দর্শকের মতো পুরো ঘটনাটা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছে।
অপরদিকে গতকালের সন্ত্রাসের পর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিন বিজেপি নেতা। বিজেপির দক্ষিণ জেলা কমিটির সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন মোহন কুমার, কিষাণ মোর্চা মন্ডলের সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন আন্না কুমার এবং যুব মোর্চার মন্ডল সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অনিল ত্রিপুরা।
গতকাল বিকেলের পর থেকে ত্রিপুরা জুড়ে যে সন্ত্রাস শুরু হয়েছে এখনও তা অব্যাহত রয়েছে। আগরতলার বরদোয়ালিতে সিপিআইএমের আরো একটি অফিসে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো বিজেপির বিরুদ্ধে। গভীর রাতে সিপিআইএম এবং দলের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের একাধিক নেতার বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সিপিআইএমের ট্রেড ইউনিয়নের রাজ্য কার্যালয়ও।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন