ইস্তফা দিলেন অশোকা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সব্যসাচী দাস। সম্প্রতি ২০১৯ নির্বাচন সম্পর্কিত তাঁর গবেষণাপত্র ‘ডেমোক্রেটিক ব্যাকস্লাইডিং ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’স লারজেস্ট ডেমোক্রেসি’ নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। যেখানে অধ্যাপক দাস দাবি করেছিলেন, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে কারচুপি হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর ইস্তফাপত্র গ্রহণ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে উপাচার্য সোমক রায়চৌধুরী এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, "দাস অর্থনীতি বিভাগে ছিলেন, বর্তমানে তিনি অশোকা থেকে ছুটিতে আছেন এবং তিনি পুনের গোখলে ইনস্টিটিউট অফ পলিটিক্স অ্যান্ড ইকোনমিক্স (ডিমড টু বি ইউনিভার্সিটি)-তে ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি হিসেবে কাজ করছেন। তাঁর ইস্তফা প্রত্যাহারের বিষয়ে তাঁকে বহু বুঝিয়ে ব্যর্থ হবার পর, বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর ইস্তফাপত্র গ্রহণ করেছে।”
তিনি আরও বলেন, ভারতীয় নির্বাচনের উপর সব্যসাচী দাসের গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার পরে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়, যেখানে অনেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মতামত জানতে চায়।
উপাচার্য রায়চৌধুরী আরও বলেন, অশোকা ইউনিভার্সিটিতে, ফ্যাকাল্টির সদস্যদের তাদের বেছে নেওয়া ক্ষেত্রগুলিতে শেখানোর এবং গবেষণা চালানোর স্বাধীনতা রয়েছে - বিশ্ববিদ্যালয় তার অনুষদ এবং শিক্ষার্থীদের দেশের এক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সর্বাধিক একাডেমিক স্বাধীনতার পরিবেশ প্রদানের চেষ্টা করে।
ওই বিবৃতিতে তিনি আরও জানান, "বিশ্ববিদ্যালয় তার অনুষদ এবং ছাত্রদের দ্বারা পরিচালিত গবেষণা পরিচালনা বা নিয়ন্ত্রণ করে না। এই একাডেমিক স্বাধীনতা তাঁর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।"
দিল্লীর অশোকা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সব্যসাচী দাসের এই গবেষণাপত্র এসএসআরএন নামক এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয় এবং বোস্টনে এক সম্মেলনে পাঠ করা হয়।
উল্লেখযোগ্যভাবে এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হবার পর কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর এক ট্যুইট বার্তায় বলেন, মারাত্মক অভিযোগ। নির্বাচন কমিশন বা ভারত সরকারের কাছে এই দাবি অস্বীকার করার মতো কোনও উত্তর থাকলে তা অবিলম্বে জানানো উচিত।
অন্যদিকে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে বলেন, অর্ধসত্য গবেষণার মাধ্যমে কীভাবে কোনও ব্যক্তি দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন? কীভাবেই বা কোনও বিশ্ববিদ্যালয় এই কাজে অনুমতি দেয়?
জানা গেছে অধ্যাপক সব্যসাচী দাসের এই গবেষণাপত্র ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতেই তৈরি করা। যেসব লোকসভা কেন্দ্রে শাসক প্রতিনিধিরা কম ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন সেই সব কেন্দ্র নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের তথ্যের ভিত্তিতে। যেখানে অধ্যাপক সব্যসাচী দাস দেখিয়েছেন, এইসব কেন্দ্রের ভোটার বৃদ্ধির হার কমেছে। বিশেষ করে মুসলিম অধ্যুষিত কেন্দ্রগুলিতে এই প্রবণতা বেশি। তিনি আরও দেখিয়েছেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যে এই ধরণের অসঙ্গতির মাত্রা অনেক বেশি। এছাড়াও তিনি জানিয়েছেন, বেশ কিছু ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইট থেকে তাদের তথ্য সরিয়ে নিয়েছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন