বিজেপির সাথে সমস্ত সম্পর্ক শেষ করলেন সত্যপাল মালিক। শুধু তাই নয়, এবার তিনি বিরোধীদের সমর্থন করবেন। বুধবার সাংবাদিকদের সামনে এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। স্পষ্ট জানিয়েছেন এবার তিনি সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবকে সাহায্য করবেন।
সোমবার মেঘালয়ের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব শেষ হয় সত্যপাল মালিকের। বুধবার উত্তরপ্রদেশের বাগপতে নিজের গ্রাম হিসাওয়াদাতে যান তিনি। গ্রামবাসীরা তাঁকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সেখানেই সাংবাদিকদের সামনেই নিজের ভবিষ্যত রাজনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে মুখ খোলেন প্রাক্তন বিজেপি নেতা।
সত্যপাল মালিক বলেন, "অখিলেশ যাদব হোক বা জয়ন্ত চৌধুরী (RLD প্রধান) হোক, এঁদের জন্য আমার হৃদয়ে অনেকটা জায়গা রয়েছে। কিন্তু যেহেতু আমি আর সক্রিয় রাজনীতি করবো না, তাই ওঁদের সিস্টেমে হয়তো আমার কোনও জায়গা হবে না। কিন্তু যদি ওঁরা আমার থেকে কোনওরকম সাহায্য চান, আমি অবশ্যই সাহায্য করবো। আমি বন্ধু হিসেবে সবসময় ওঁদের পাশে থাকবো।"
কৃষকদের কল্যাণের জন্য মোদী সরকারের কৃষি-বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে এদিন স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, কৃষকদের এবার একজোট হওয়ার সময় এসেছে, যাতে কোনও রাজনৈতিক দলের পরিকল্পনা তাদের ঐক্য ভাঙতে না পারে।
প্রাক্তন রাজ্যপালের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী বা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী প্রায়ই কৃষকদের প্রতিশ্রুতি দেন কিন্তু তা পূরণ করেননা। সরকার ফসলের উপর MSP লাগু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কিন্তু এখনও তা পূরণ করেনি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টোনিকে বরখাস্ত করারও দাবি তুলেছেন তিনি।
সদ্য রাজ্যপাল হিসেবে মেয়াদ শেষ হয়েছে সত্যপাল মালিকের। এবার কেন্দ্র সরকার তাঁর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহার করবে, সাংবাদিকদের সামনে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, "যতই তদন্ত করুক, আমার কাছ থেকে কিছুই পাওয়া যাবে না। কারণ আমি একজন ফকির মানুষ।"
৭৬ বছরের সত্যপাল মালিক ১৯৭৪-৭৭ সাল পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার সদস্য ছিলেন। ১৯৮৯ সালে জনতা দলের টিকিটে জিতে লোকসভার সদস্য হন। ১৯৯০ সালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন তিনি। ২০০৪ সালে বিজেপিতে যোগ দিয়ে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তৎকালীন RLD প্রধান অজিত সিংয়ের কাছে পরাজিত হন তিনি। ২০১৭ সালে মোদী সরকার তাঁকে বিহারের রাজ্যপাল নিয়োগ করে। ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে তাঁকে বিহার থেকে সরিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল করা হয়। তাঁর সময়কালেই জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া ৩৭০ ধারা বাতিল করে মোদী সরকার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন