রাষ্ট্রদ্রোহ আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বড়সড় ধাক্কা খেল মোদী সরকার। আপাতত স্থগিত থাকবে এই আইন। বুধবার এমনটাই নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত।
আদালত আরও জানিয়েছে, আইন পুনর্বিবেচনা না হওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশ বহাল থাকবে। ইতিমধ্যেই এই আইনে যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে তাঁরা জামিনের জন্য আদালতে আবেদন জানাতে পারেন।
আজ শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এন ভি রমনা বলেন, "ভারত সরকার আইনটি পুনর্বিবেচনা করবে। আবেদনকারীরা বলছেন আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে। অ্যাটর্নি জেনারেলও একই মন্তব্য করেছেন। তিনি বলছেন হনুমান চালিশা মামলায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাই আমাদের মনে হচ্ছে পুনর্বিবেচনা না হওয়া পর্যন্ত এই আইনের ব্যবহার না করাই সঠিক হবে। আমরা আশা করছি আইনের পুনর্বিবেচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্র এবং রাজ্য ১২৪ এ ধারার অধীনে কোনো FIR নথিভুক্ত করবে না।"
কেন্দ্রের তরফ থেকে আদালতে উপস্থিত থাকা সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা জানিয়েছেন, সুপারিনটেনডেন্ট লেভেলের কোনো পুলিশ অফিসার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন ভবিষ্যতের FIR গুলিতে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা যাবে কিনা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪ এ ধারায় সরকারের বিরোধিতায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনার উল্লেখ রয়েছে। ব্রিটিশ শাসনে তৈরি এই আইনের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনকারীদের দমনপীড়ন। বর্তমান কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে এই আইনের অপব্যবহারের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। একাধিক আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে মামলা দায়ের করে তাঁদের দিনের পর দিন জেলে রাখা হয়েছে। অথচ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রমাণ দেখাতে পারছে না সরকার। এই অবস্থায় এই আইনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে।
এর আগের শুনানিতে আইনটির অপব্যবহার সম্পর্কে পর্যালোচনা করার জন্য বেশি সময় চেয়েছিল কেন্দ্র। এর জবাবে প্রধান বিচারপতি কেন্দ্রকে তিরস্কার করে বলেন, "রাজ্যগুলি বলছে তারা আইনটি পুনর্বিবেচনা করছে। আমরা অযৌক্তিক হতে পারি না। বিবেচনার কতটা সময় দেওয়া যেতে পারে আমাদের তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কেউ কি মাসের পর মাস জেল থাকতে পারে? আপনাদের হলফনামায় বলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নাগরিক স্বাধীনতা, মানবাধিকার নিয়ে সচেতন। সেই স্বাধীনতা এইভাবে রক্ষা করছেন আপনারা?"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন