ক্রমেই বেড়ে চলেছে টাকার পাহাড়। দুই রাজ্য ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশায় আয়কর হানায় এখনও পর্যন্ত উদ্ধার প্রায় ৩৫৪ কোটি টাকা বলে জানা যাচ্ছে। এই প্রথম এত পরিমাণ কালো টাকা উদ্ধার হল আয়কর হানাতে বলে মনে করা হচ্ছে।
গত ৬ ডিসেম্বর ঝাড়খন্ডের কংগ্রেস রাজ্যসভার সাংসদ ধীরাজ প্রসাদ সাহুর বাসভবনে তল্লাশি অভিযান চালায় আয়কর বিভাগ। এখনও চলছে সেই তল্লাশি। ওড়িশায় 'বাউধ ডিস্টিলারি প্রাইভেট লিমিটেড' নামক একটি বড় মদ কারখানার সাথে জড়িত ধীরাজ প্রসাদ সাহু। এই মদ কারখানায় আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগে সাহুর বাড়িতে তল্লাশি চালায় আয়কর দপ্তর। এই মদ কারখানার এক শীর্ষ কর্তা বানটি সাহুর বাড়ি থেকে টাকাভর্তি প্রায় ১৯টি ব্যাগ উদ্ধার হয়েছে বলে আয়কর দফতর সূত্রে খবর।
এ ছাড়াও কারখানার পাশেই একটি জায়গা থেকে বিপুল পরিমাণ ছেঁড়া ৫০০ টাকার নোট উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয়রাই সেই টাকা দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। সব মিলিয়ে আয়কর আধিকারিকরা ১৭৬টি ব্যাগ উদ্ধার করেছেন। এই টাকাও সাংসদের কারখানারই বলে মনে করছেন আধিকারিকরা।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বোলাঙ্গিরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের আঞ্চলিক ম্যানেজার ভগত বেহেরা জানিয়েছেন যে, উদ্ধার হওয়া ১৭৬টি ব্যাগের মধ্যে ১৪০টি ব্যাগের টাকা গোনার কাজ শেষ হয়েছে। সঠিক সময়ে গণনার কাজ শেষ করতে অতিরিক্ত মেশিন এবং ব্যাঙ্ক কর্মীদের কাজে লাগানো হয়েছে। ৫০ জন ব্যাঙ্ক কর্মী মোট ৪০টি মেশিন নিয়ে টাকা গোনার কাজ করছেন। টাকা গোনার সময় মেশিনগুলিতে যাতে কোনও প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা না দেয়, তাই আগেভাগেই ইঞ্জিনিয়ারদের ঘটনাস্থলে উপস্থিত রাখা হয়েছে।
এদিকে এই টাকা উদ্ধারকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এদিন এই টাকা উদ্ধার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, “দেশবাসী, আপনারা এই পাই-পয়সার উপর নজর রেখেই তাঁদের ‘সৎ ভাষণ’ শুনুন। জনতাকে যারা এভাবে লুট করছে তাঁদের পাই-পয়সা ফেরত দিতে হবে। এটাই মোদীর গ্যারান্টি।“
এই প্রসঙ্গে কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়রাম রমেশ জানিয়েছেন, সাংসদ সাহুর ব্যবসার সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। কী ভাবে এত টাকা তাঁর বাড়ি এবং অফিস থেকে উদ্ধার করা হল, তাঁর উচিত সেই নিয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া।
কংগ্রেসের অভিযোগ, সাহুর বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার নিয়ে শোরগোল করার কিছু নেই। মোদী তাঁর ঘনিষ্ট ব্যবসায়ী আদানির বেআইনি কারবারে যে টাকা নয়ছয় করেছেন, তা নিয়ে পোষ্ট করুন, সেই টাকা আগে উদ্ধার করুন।
কর্ণাটকে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার কথায়, বেআইনি টাকার অভিযোগ তুলে শুধুমাত্র কংগ্রেসকেই নিশানা করছে কেন্দ্র। বিজেপি নেতাদের বাসভবনে হানা দিক আয়কর দপ্তর, তাহলে দেখা যাবে কত কালোটাকা মজুত আছে।
সবমিলিয়ে এই টাকা উদ্ধার নিয়ে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন