রবিবার নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের সময় স্পিকারের আসনের কাছে একটি ঐতিহাসিক সোনার রাজদণ্ড স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার, দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
এদিন শাহ বলেন, ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট, ব্রিটিশদের কাছ থেকে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীক হিসেবে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর হাতে এটি তুলে দেওয়া হয়েছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই রাজদণ্ডটিকে "সেঙ্গোল" বলা হয় - যা তামিল শব্দ "সেম্মাই" থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘ন্যায়পরায়ণতা’।
এর ইতিহাস বলতে গিয়ে শাহ বলেন, ‘মাউন্ট ব্যাটেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরুকে জিজ্ঞাসা করেন, ব্রিটিশদের থেকে ভারতীয়দের হাতে স্বাধীনতা হস্তান্তরের প্রতীক হিসেবে ভারতীয় পরম্পরা, সংস্কৃতি মেনে কীসের আয়োজন করা উচিত? এর জন্য দেশের শেষ গভর্নর জেনারেল সি রাজাগোপালাচারীর (C Rajagopalachar) শরণাপন্ন হন নেহেরু। যিনি সকলের কাছে রাজাজি নামে পরিচিত। তিনিই নেহরুকে নতুন রাজার (শাসকের) হাতে রাজদণ্ড দেওয়া নিয়ে তামিল ঐতিহ্যের কথা বলেন।’
‘রাজাজি জানান, চোলদের রাজত্বকাল থেকেই এই প্রথা অনুসরণ করে আসা হচ্ছে। এবং তিনি নেহেরুকে বলেন, ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতের স্বাধীনতাকে চিহ্নিত করতে পারে এই রাজদণ্ড। এরপর, এই রাজদণ্ডের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব পড়ে রাজাজির উপরেই।’
ভারতের স্বাধীনতাকে চিহ্নিত করে এমন রাজদণ্ড সাজানোর কঠিন কাজের মুখোমুখি হয়ে, বর্তমান তামিলনাড়ুর বিশিষ্ট মঠ তিরুভাদুথুরাই আথিনামের সাথে যোগাযোগ করেন রাজাজি। মঠের তৎকালীন দ্রষ্টা এই রাজদণ্ড তৈরির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেঙ্গোলটি তৈরি করেন তৎকালীন মাদ্রাজের ভুমিদি বাঙ্গারু নামে এক স্বর্ণ শিল্পী। এই সেঙ্গোল দৈর্ঘ্যে পাঁচ ফুট এবং এর উপরে একটি 'নন্দী' ষাঁড় রয়েছে, যা ন্যায়বিচারের প্রতীক।
রিপোর্ট অনুসারে, প্রথমে রাজদণ্ডটি মাউন্টব্যাটেনের কাছে হস্তান্তর করেন মঠের এক প্রবীণ পুরোহিত এবং তারপরে তা ফিরিয়ে নেন তিনি। তারপর, এটির উপর গঙ্গাজল ছিটিয়ে দেওয়া হয়। এরপর, ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা অর্জনের ১৫ মিনিট আগে এটি মিছিল করে প্রধানমন্ত্রী নেহরুর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন