পাটনা হাইকোর্টে জোড় ধাক্কা নীতিশ কুমারের সরকারের। খারিজ হয়ে গেল সরকারি চাকরী এবং শিক্ষাক্ষেত্রে সংরক্ষণ বৃদ্ধির প্রস্তাব সংক্রান্ত বিল। উল্লেখ্য, গত বছর নভেম্বরে বিধানসভায় পাশ হয় তফশিলি জাতি, তফশিলি উপজাতি এবং অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জাতির জন্য সংরক্ষণের কোটা। ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছিল ৬৫ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার পাটনা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিনোদ চন্দ্রনের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, বিহারে জাতভিত্তিক সংরক্ষণ ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬৫ শতাংশ করা যাবে না। যেসময় বিধানসভায় এই বিল পাশ হয়, তখন নীতিশ ছিলেন বিরোধী মহাগঠবন্ধন সরকারের মুখ্যমন্ত্রী। এখন তিনি এনডিএ-তে।
গত বছর নভেম্বরের গোড়ায় জাতগণনার দ্বিতীয় রিপোর্ট পেশের পরেই তৎকালীন জেডিইউ-আরজেডি-কংগ্রেস মন্ত্রিসভার বৈঠকে গৃহীত প্রস্তাবে সংরক্ষণ বাড়ানোর বিল পেশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
নতুন বিল অনুসারে তফশিলি জাতির ক্ষেত্রে ১৬ শতাংশ সংরক্ষণের কোটা বেড়ে হয় ২০ শতাংশ। তফশিলি উপজাতির ক্ষেত্রে সংরক্ষণের কোটা আগের তুলনায় দ্বিগুণ করা হয়। এছাড়া অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়াদের ক্ষেত্রে সংরক্ষণ কোটা ১৮ শতাংশ থেকে বেড়ে হয় ২৫ শতাংশ এবং অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণির ক্ষেত্রে সংরক্ষণ কোটা ১২ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৫ শতাংশ হয়।
এর ফলে জেনারেল ক্যাটেগরি (অসংরক্ষিত)-র উপর আঁচ আসবে বলে জাতগণনার বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছিলেন। তাঁদের দাবি ছিল, এই ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির ফলে বঞ্চিত হবে ‘মেধা’।
সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদনে সেসময় জাতগণনার রিপোর্ট পেশ করেছিল নীতিশের সরকার। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩৩ শতাংশ অনগ্রসর (ওবিসি) এবং অতি অনগ্রসরের (ইবিসি) অর্থনৈতিক অবস্থান দারিদ্রসীমার নীচে। অন্য দিকে, তফসিলি জাতির (এসসি) মধ্যে গরিব ৪২ শতাংশেরও বেশি।
জাতগণনার রিপোর্টে উঠে আসে জেনারেল কাস্টের আর্থিক অবস্থাও। জানানো হয়েছিল, দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী ‘জেনারেল কাস্ট’-এর মানুষের সংখ্যা প্রায় ২৬ শতাংশ। চার জনের পরিবারের মাসিক আয় ৬,০০০ টাকার কম হলে সেই পরিবারকে ‘দরিদ্র’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয় ওই রিপোর্টে। তার পরই বিধানসভায় বিল পাশ করে নীতিশ।
পাটনা হাইকোর্টে এই নিয়ে একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। গত মার্চে ছিল এই মামলার শুনানি। শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছিল হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার এই মামলার রায় দেয় পাটনা হাইকোর্ট। খারিজ হয়ে যায় নীতিশের সংরক্ষণ বিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন