'অটল বিহারী বাজপেয়ীর আমলে এমন হয়নি।' শিবসেনার নাম এবং প্রতীক নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে এবার প্রকাশ্যেই গর্জে উঠলেন NCP প্রধান শারদ পাওয়ার। জোটের স্বার্থে উদ্ধব ঠাকরের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি।
কয়েকদিন আগেই, শরদ পাওয়ার বলেছিলেন, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ সিন্ধের গোষ্ঠীকে যেভাবে শিবসেনার নাম এবং প্রতীক দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি), সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ‘বিতর্ক’ বাড়াতে চান না তিনি।
কিন্তু, বুধবার এই নিয়ে তিনি প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন। গর্জে উঠেছেন নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ভূমিকা নিয়ে। তিনি বলেন, 'আমি কখনো নির্বাচন কমিশনকে কোনো একটি দলের নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নিতে দেখিনি। অতীতে রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরের সঙ্গে বিভক্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।'
নিজেদের উদাহরণ টেনে NCP প্রধান বলেন, 'আমরা কংগ্রেস (ও) এবং কংগ্রেস (আই) হতে দেখেছি। সে সময়, প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধী দলের নাম হিসাবে কংগ্রেস (আই) এবং প্রতীক হিসাবে 'হাত' চিহ্ন নিয়েছিলেন। আবার, কংগ্রেসের সাথে যখন আমাদের বিচ্ছেদ করছিল, তখন আমরা দলের নতুন নাম হিসাবে ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি) এবং ঘড়ির প্রতীক নিয়েছিলাম। কেউ কখনও আসল দল এবং তার প্রতীকের উপর অধিকার দাবি করেনি।'
বিজেপিকে নিশানা করে শরদ পাওয়ার জানান, 'একটি দল দেশের আদর্শ ও ভ্রাতৃত্ব বিনষ্ট করছে।' তিনি বলেন, 'যখন অটল বিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর এমন আক্রমণ হয়নি। নরেন্দ্র মোদীর শাসনকালে অন্য রাজনৈতিক দলের ওপর আক্রমণ হচ্ছে। কোনও রাজনৈতিক দলকে কাজ করতে দিতে চায় না কেন্দ্র। নির্বাচন কমিশনকে এই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা রাজনৈতিক দলের ওপর হামলা। নির্বাচন কমিশনকে কখনও এমন সিদ্ধান্ত নিতে দেখিনি। নির্বাচন কমিশনের এমন সিদ্ধান্ত এই প্রথম দেখলাম।'
এখানেই থেমে না থেকে NCP প্রধান বলেন, 'এটা কি নির্বাচন কমিশন? নাকি ওপরে কেউ ক্ষমতাবান আছেন যিনি নির্বাচন কমিশনকে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে নির্দেশনা দিচ্ছেন? যখনই ক্ষমতার অতিরিক্ত অপব্যবহার হবে, জনগণ উপযুক্ত সুযোগ পেলেই যোগ্য জবাব দেবে। জনগণ তাদের (ক্ষমতার অপব্যবহারকারীদের) শিক্ষা দেবে।'
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পাওয়ারের এই মন্তব্যের পিছনে বৃহত্তর লক্ষ্য কাজ করছে। তা হল, আগামী লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনী লড়াইয়ে বৃহত্তর ধর্মনিরপেক্ষ জোটকে অক্ষত রাখা। আর, অন্য একটি কৌশল হল - উদ্ধবের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর সমর্থনও টিকিয়ে রাখা। যাতে, আগামী নির্বাচনগুলিতে বিভক্তির কারণে উদ্ধবসেনা যে অঞ্চলগুলি ছেড়ে দিতে পারে, সেখানে এনসিপিকে মজবুত করা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন