স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার কাটিয়ে UPSC-তে ১৭৭ র‍্যাঙ্ক করলেন ৭ বছরের মেয়ের মা শিবাঙ্গী

শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হয়রানিতে বিরক্ত হয়ে তিনি তার বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতে শুরু করে। স্বামীর সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদের মামলাও চলছে।
সপরিবারে শিবাঙ্গী
সপরিবারে শিবাঙ্গীছবি - সংগৃহীত
Published on

উত্তরপ্রদেশের হাপুর শহরের পিলখুয়ার বাসিন্দা শিবাঙ্গী গোয়াল এবছর UPSC-তে ১৭৭ তম স্থান অর্জন করছেন। তিনি শুধুমাত্র তাঁর পরিবারকেই নয়, সমগ্র জেলায় খ্যাতি এনে দিয়েছেন৷ এই সাফল্যের পথে তার যাত্রা মোটেও সহজ ছিল না। শিবাঙ্গী একজন বিবাহিত মহিলা এবং একটি ৭ বছর বয়সী মেয়েও রয়েছে তাঁর। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হয়রানিতে বিরক্ত হয়ে তিনি তার বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। স্বামীর সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের মামলাও চলছে। এই অবস্থায় UPSC-তে সর্বভারতীয় স্তরে ১৭৭ র‍্যাঙ্ক পেয়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রে শিবাঙ্গী।

কলেজজীবন শেষ হতে না হতেই বিয়ে হয়ে যায় শিবাঙ্গীর। নতুন জীবনে প্রবেশ করে তাঁর জীবন সুখকর হয়নি। শিবাঙ্গীর দাবি, বিয়ের পরই পণ চেয়ে শ্বশুরবাড়িতে, তাঁর ওপর অত্যাচার শুরু হয়। দিনের পর দিন এভাবেই চলতে থাকে। সংসারের বিপাকে পড়ে তাঁর স্বপ্নভঙ্গ হতে বসেছিল। শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে, তিনি মেয়ে রায়নাকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসেন।

শিবাঙ্গী তার UPSC পাস করার অভিজ্ঞতা এবং কীভাবে তিনি তা পেরিয়ে উঠলেন এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, “আমি সমাজের বিবাহিত মহিলাদের একটি বার্তা দিতে চাই। তাদের শ্বশুর বাড়িতে যদি তাদের সাথে কিছু খারাপ ঘটনা ঘটে, তবে তাদের ভয় পাওয়া উচিত নয়। অন্য কিছুর আশা না করে আপনিও নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন। মহিলারা সবকিছু করতে সক্ষম। আপনি যদি ভালভাবে পড়াশোনা করেন এবং কঠোর পরিশ্রম করেন তবে আপনি একজন আই.এ.এস অফিসারও হতে পারেন”।

সমাজবিজ্ঞানের ছাত্রী শিবাঙ্গী বিয়ের আগে থেকেই আই.এ.এস হতে চেয়েছিলেন। দুবার চেষ্টা করে তিনি দুইবারই ব্যর্থ হন। তারপর তাঁর বিয়ে হয়ে যায়।

শিবাঙ্গীর বাবা তাঁকে বলেন, ‘যা করতে চাও, তাই কর’। তখন তিনি ভাবেন আবার UPSC-এর জন্য প্রস্তুতি নেবেন। এরপর পরীক্ষার প্রস্তুতি চলে একনাগাড়ে। শিবাঙ্গী বলেছেন, তিনি ছোটবেলা থেকেই এই দিনটির স্বপ্ন দেখেছিলেন। কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠার পর অবশেষে এই দিনটি এসেছে। তিনি তার এই সাফল্যের কৃতিত্ব তার বাবা-মা এবং মেয়ে রায়নাকে দেন।

পরিশেষে শিবাঙ্গী বলেছেন, তিনি যখন স্কুলে পড়তেন, তখন তার স্কুলের অধ্যক্ষ তাঁকে UPSC-র জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেছিলেন। তখন থেকেই তার স্বপ্ন ছিল আই.এ.এস হওয়া। UPSC পাশ করার জন্য তিনি নিজেই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।

সপরিবারে শিবাঙ্গী
UPSC: সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় প্রথম তিনটি স্থানেই মহিলা, শীর্ষে JNU-র প্রাক্তনী শ্রুতি শর্মা

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in