‘এটা মজার বিষয় গতকাল প্রধানমন্ত্রী (মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের) প্রশংসা করেছেন। এটাকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। কারণ প্রধানমন্ত্রী একইভাবে এর আগে সংসদে গুলাম নবি আজাদের প্রশংসা করেছিলেন। আমরা সবাই দেখেছি এরপর কী হয়েছিল।’ বুধবার, সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এভাবেই মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকে কটাক্ষ করেছেন রাজস্থানের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলট।
গত মঙ্গলবার, রাজস্থানের বাঁশওয়ারার মানগড় ধামের এক অনুষ্ঠান মঞ্চে একসঙ্গে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল সহ একাধিক ব্যক্তি।
এই মঞ্চেই গেহলটের প্রশংসা করে নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘অশোকজি এবং আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছি। তিনি আমাদের মধ্যে অনেক সিনিয়র। এই মুহূর্তে যারা মঞ্চে বসে আছেন তাদের মধ্যে এখনও তিনি অন্যতম সিনিয়র মুখ্যমন্ত্রী।’
অশোক গেহলটকে নিয়ে মোদীর এই প্রশংসাকে ‘হাতিয়ার’ করেছেন শচীন পাইলট। তিনি কংগ্রেস ছেড়ে গুলাম নবী আজাদের আঞ্চলিক দল গঠনের প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি ইঙ্গিত দেন, আজাদের মতো গেহলটও একই পথ অনুসরণ করতে পারেন।
আগামী বছর রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ফের একবার প্রকাশ্যে চলে এসেছে সচিন পাইলট এবং অশোক গেহলটের দ্বন্দ্ব। ঠিক যেভাবেb- কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনের প্রাক্কালে চরমে উঠেছিল পাইলট-গেহলট দ্বন্দ্ব। পরিস্থিতি এমনই হয়ে গিয়েছিল যে গেহলটপন্থী ৮০ জনেরও বেশি বিধায়ক পদত্যাগ করার হুমকি দিয়েছিলেন।
তবে সেই রেশ এখনও কাটেনি। বুধবার, সেই ‘বিদ্রোহী’ গেহলটপন্থী বিধায়কদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গের কাছে আবেদন জানিয়েছেন শচীন পাইলট।
এদিন পাইলট বলেন, ‘এআইসিসি (AICC)-র নজরে একটি শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনা রয়েছে। তিনজনকে নোটিশ পাঠিয়েছে দল। তারা ইতিমধ্যেই জবাব দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কংগ্রেস একটি পুরানো দল। এই দলের নিয়ম, কোনও নেতা যত সিনিয়রই হোক না কেন সবাই সমান। আমি নিশ্চিত নতুন সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে (বিদ্রোহী বিধায়কদের বিরুদ্ধে) ব্যবস্থা নেবেন।’
প্রসঙ্গত, কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল অশোক গেহলটের। তবে, কংগ্রেসের ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি মেনে গেহলটের রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়ার দাবি ওঠে। আর, সেই দাবির বিরোধিতা করে গত ২৫ সেপ্টেম্বর, বিদ্রোহ ঘোষণা করেন গেহলট অনুগত ৮২ বিধায়ক। হুঁশিয়ারির সুরে তাঁরা জানান, শচীন পাইলটকে মুখ্যমন্ত্রী করা হলে সবাই পদত্যাগ করবে। এতে চরম অস্বস্তিতে পড়ে কংগ্রেস হাইকমান্ড। শেষমেশ অশোক গেহলটের পরিবর্তে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মল্লিকার্জুন খড়গে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন