পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল থাকাকালীন জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে মমতা ব্যানার্জি সরকারের বিরোধ ছিল তুঙ্গে। তারপরেও কেন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সেই ধনখড়ের বিরুদ্ধে ভোট দেয়নি তৃণমূল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সিপিআই(এম)-র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।
বিভিন্ন রাজ্যে ‘রাজ্যপাল’দের রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি। এই অভিযোগ তুলে বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন ইয়েচুরি। কংগ্রেসের নব-নির্বাচিত সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন তিনি।
সূত্রের খবর, এই ইস্যুতে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিনের সঙ্গে কথা বলবেন ইয়েচুরি। কিন্তু তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলবেন কিনা, সেই প্রশ্নের জবাবে ইয়েচুরি বলেন, ‘তৃণমূলের মুখ্যমন্ত্রী কখন কোন দিকে অবস্থান নেন - সেটাই তো জানা নেই। যে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে উনি অভিযোগ করেছিলেন, সেই রাজ্যপালকেই উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কার্যত সমর্থন করেছেন।’
বর্তমানে, বাম শাসিত কেরালায় রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত চরমে উঠেছে। সম্প্রতি, কেরালের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। আর, তা নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে কেরালা সরকারের সংঘাত চরমে উঠেছে।
মঙ্গলবার, এই ইস্যুতে এক বিবৃতি জারি করেছে সিপি(আই)-এর কেন্দ্রীয় কমিটি। যেখানে বলা হয়েছে - ‘LDF সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য, কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপির রাজনৈতিক উদ্দেশ্যগুলিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য, কেরালার রাজ্যপালের পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করছে কেন্দ্রীয় কমিটি। তিনি যেভাবে কেরালার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের পদত্যাগ এবং রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন, তা ভারতীয় সংবিধান অনুমোদন করে না।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘কেরালার ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক এবং বৈজ্ঞানিক উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে নিশানা করেছে রাজ্যপাল। এই পদক্ষেপগুলি আসলে হিন্দু মতাদর্শিক এজেন্ডা প্রচারের সুবিধার্থে নেওয়া হয়েছে। ঠিক যে উদ্দেশ্য নিয়ে জেএনইউ, হায়দ্রাবাদ এবং আরও অনেক কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে লক্ষ্য করে চলেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তবে, কেরালার জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে রাজ্যপালের এই ধরনের নির্লজ্জ পক্ষপাতিত্বকে প্রতিহত করবে। একইসঙ্গে, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত LDF সরকারকে অস্থিতিশীল করার যে চেষ্টা চলছে - তাকে পরাজিত করবে।’
এর আগে একই দাবি করেছিলেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিনি বলেছিলেন, ‘চ্যান্সেলর পদের 'অপব্যবহার' করছেন তিনি (রাজ্যপাল)। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি সরকারকে ভীতিকর বানিয়ে রাজ্যকে আড়াল থেকে শাসন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে, তা হবে না। রাজ্যবিরোধী নীতি অব্যাহত থাকলে রাজ্যপালকে জনবিক্ষোভের মুখোমুখি হতে হতে হবে।’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন