গত ১৪ দিন ধরে অনশন করছেন লাদাখের পরিবেশকর্মী সোনম ওয়াংচুক। লাদাখের জন্য সাংবিধানিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সহ অন্যান্য দাবিতে গত ১৪ দিন ধরে লেহ-তে শূন্যের প্রায় ১২ডিগ্রি নিচের তাপমাত্রায় অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিন তাঁর অনশন ১৫ দিনে পা দিয়েছে।
সাংবাদিকদের সোনম ওয়াংচুক জানিয়েছেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ষষ্ঠ তফশিলের প্রতিশ্রুতি রাখতে অস্বীকার করেছে। যা বিশ্বাসভঙ্গের সমান। তাঁর বক্তব্য অনুসারে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, ষষ্ঠ তফশিল দেওয়া যাবে না। পরিবর্তে কিছু সাংবিধানিক সুরক্ষা দেওয়া হবে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপে স্থানীয় মানুষ অত্যন্ত হতাশ এবং আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এই অঞ্চল থেকে বিজেপি একটিও আসন পাবে না। আমরা গোটা দেশকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পালন না করা হলে গোটা নির্বাচন ব্যবস্থাই তামাশায় পরিণত হবে।
মঙ্গলবার এক এক্স বার্তায় সোনম লিখেছেন, “লাদাখের ভূমি, পরিবেশ এবং আদিবাসী সংস্কৃতিকে সুরক্ষিত রাখতে -১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ২৫০ জন মানুষ ক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমিয়েছেন। দক্ষিণে বিশাল ভারতীয় শিল্প কারখানা এবং উত্তরে চীনা দখলদারিত্বের জন্য আমাদের যাযাবররা তাঁদের চারণভূমি হারাচ্ছে। এই অঞ্চলের বাস্তব অবস্থা তুলে ধরতে আমরা শীঘ্রই ১০,০০০ লাদাখি মেষপালক ও কৃষকদের বর্ডার মার্চের পরিকল্পনা করছি।”
বুধবার এক এক্স বার্তায় তিনি বলেন, আজ আমাদের অনশনের ১৫ দিন। আমি এখনও শুধুমাত্র নুন এবং জলের ওপর নির্ভর করে অনশন চালিয়ে যাচ্ছি। আমার সঙ্গে ১২৫ জন -১১ ডিগ্রি তাপমাত্রায় অনশন চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের বুঝতে হবে যে লাদাখের হিমবাহ রক্ষার চেষ্টা করা শুধুমাত্র লাদাখের মানুষদের সমস্যা নয়।
সংবাদমাধ্যমের কাছে ওয়াংচুক জানিয়েছেন, আমরা পশুপালকদের কাছে জানতে পেরেছি যে আগে তাঁরা যেখানে পশু নিয়ে যেতে পারতেন এখন আর তাঁদের সেখানে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। বেশ কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেই রাখালদের আটকে দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ২৭ মার্চ এবং ৭ এপ্রিল এই পদযাত্রা শুরু হবে প্যাংগং টাসোর উত্তর ও দক্ষিণ তীরের ফিঙ্গার অঞ্চল এবং ডেমচোক, চুশুল ও চীনের সাথে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার অন্যান্য এলাকা থেকে।
অয়াংচুক আরও জানিয়েছেন, আমাদের পদযাত্রার সময় এই অঞ্চলের মানুষ কীভাবে কর্পোরেটদের কাছে জমি হারাচ্ছে তাও আমরা দেখাবো। এইসব অঞ্চলের প্রধান চারণভূমিগুলিতে সোলার পার্ক করা হচ্ছে। তাঁর দাবি, ওই অঞ্চলের মানুষ প্রায় দেড় লক্ষ বর্গ কিলোমিটার প্রধান চারণভূমি হারিয়েছে। গত কয়েক বছরে চীন এই জমির বড়ো অংশ দখল করেছে।
সম্প্রতি সোনম ওয়াংচুক এক ভিডিও প্রকাশ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তি দূর করার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন, ষষ্ঠ তফসিলের উদ্দেশ্য শুধু বহিরাগতদের আটকানো নয়, পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল এলাকা বা সংস্কৃতি-উপজাতি সবাইকে স্থানীয় মানুষের হাত থেকেও রক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, এটি বাস্তবায়নের পর স্থানীয়দের হাত থেকেও তারা রক্ষা পাবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন