হেফাজতেই ৮৪ বছরের সমাজকর্মী স্ট্যান স্বামীর মৃত্যুর পর দেশে বিদেশে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে ভারত সরকার। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংগঠন সহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ভারতের কাছ থেকে এই ঘটনার জবাবদিহি করেছিল। এর জবাবে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে 'আইন লঙ্ঘনের জন্য স্ট্যান স্বামীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।'
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি জানিয়েছেন, "আইন অনুযায়ী যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই স্ট্যান স্বামীকে আটক ও গ্রেফতার করেছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাঁর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ থাকার কারণে আদালত তাঁর জামিনের আবেদন বাতিল করে দিয়েছে। আইন লঙ্ঘনের জন্য ভারত কর্তৃপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, বৈধ অধিকারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়নি। সমস্ত পদক্ষেপই কঠোরভাবে আইন মেনে করা হয়েছে।"
সোমবার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ভীমা কোরেগাঁও মামলায় UAPA আইনের অধীনে গ্রেপ্তার হওয়া স্ট্যান স্বামী। ৮ অক্টোবর রাঁচিতে নিজের বাড়ি থেকে গুরুতর অসুস্থ স্বামীকে গ্রেফতার করেছিল এনআইএ। জেলে কোনো চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন না বলে একাধিকবার অভিযোগ করেন তিনি। এরপর ২৮ মে তাঁকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করার নির্দেশ দিয়েছিল বোম্বে হাইকোর্ট।
মন্ত্রক জানিয়েছে, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বেসরকারি হাসপাতালে সবরকম সম্ভাব্য চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হচ্ছিল ফাদার স্বামীকে। "ভারতের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক রাষ্ট্রনীতি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার দ্বারা সম্পূর্ণ, যেখানে দেশীয় ও রাজ্যস্তরের মানবাধিকার কমিশন যেকোনো ভায়োলেশনের ওপর নজর রাখে, মিডিয়া মুক্তভাবে সংবাদ পরিবেশন করতে পারে এবং একটি প্রাণবন্ত, সোচ্চার নাগরিক সমাজ রয়েছে। ভারত তার সমস্ত নাগরিকের মানবাধিকারের উন্নতি ও সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে", জানিয়েছে মন্ত্রক।
আদিবাসীদের জন্য আজীবন লড়ে যাওয়া স্ট্যান স্বামীর মৃত্যুর পর মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের অফিস এক বিবৃতিতে বলেছিল, "মত প্রকাশ এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে নিজেদের অধিকার প্রয়োগের জন্য কাউকে আটক করা উচিত নয়।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন