স্ট‍্যান স্বামীর কম্পিউটারে ভুয়ো নথি ঢুকিয়েছিল হ্যাকাররা, বিস্ফোরক তথ্য মার্কিন রিপোর্টে

আর্সেনাল কনসাল্টিং জানিয়েছে, '২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত স্ট্যান স্বামীর কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করছিল হ্যাকাররা। তারা ৪৪টি ভুয়ো নথি ম্যালওয়ারের মাধ্যমে স্বামীর কম্পিউটারে ঢুকিয়ে দেয়।'
স্ট্যান স্বামী
স্ট্যান স্বামীফাইল ছবি, সৌজন্যে - দ্য স্ক্রল
Published on

২০১৪ সাল থেকে হ্যাক করা হয়েছে ফাদার স্ট্যান স্বামীর কম্পিউটার। একের পর এক ভুয়ো তথ্য ঢোকানো হয়ে তাঁর কম্পিউটারে। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে এই কাজ করেছে হ্যাকাররা। ফরেন্সিক পরীক্ষার পর বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে, মার্কিন ফরেনসিক সংস্থা - 'আর্সেনাল কনসাল্টিং' (Arsenal Consulting)।

ভীমা কোরেগাঁও মামলায় গ্রেফতারির পর আদালতে একাধিকবার নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছিলেন সমাজকর্মী স্ট্যান স্বামী। অসুস্থ স্ট্যান স্বামীর চিকিৎসা দরকার বলে আদালতে সওয়াল করেছিলেন তাঁর আইনজীবীরা। কিন্তু তাঁকে জামিন দেওয়া হয়নি। শেষমেশ জঙ্গি যোগের অভিযোগে আট মাসেরও বেশি কারাবাসের পর, ২০২১ সালের ৫ জুলাই জেলে থাকাকালীন প্রাণ হারান অসুস্থ স্ট্যান স্বামী।

কিন্তু, এবার তাঁর কম্পিউটারের ফরেন্সিক পরীক্ষার পর চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। যেখানে জানা যাচ্ছে, হ্যাক করে স্ট্যান স্বামীর কম্পিউটারে ঢোকানো হয়েছিল বিভিন্ন ‘তথ্য-প্রমাণ’ (ভুয়ো নথি)। সেই তথ্য প্রমাণের সূত্র ধরেই স্ট্যান স্বামীকে গ্রেফতারির পর দোষী প্রমাণিত করার চেষ্টা চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA)।

মার্কিন ফরেনসিক সংস্থা আর্সেনাল কনসাল্টিং জানিয়েছে, '২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ভীমা-কোরেগাঁও মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ফাদার স্ট্যান স্বামীর কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করছিল হ্যাকাররা। তারাই বিভিন্ন সময় মাওবাদী চিঠিপত্র সহ ৪৪টি ভুয়ো নথি ম্যালওয়ারের মাধ্যমে স্বামীর কম্পিউটারে ঢুকিয়ে দেয়।' এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

২৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে আর্সেনাল কনসাল্টিং জানিয়েছে, ভীমা কোরেগাঁও মামলায় অভিযুক্তদের কম্পিউটারে ভুয়ো নথি পাঠানোর জন্য C2 সার্ভার ব্যবহার করেছিল হ্যাকাররা। এবং পুরো বিষয়টি নজরদারি, ফাইল পাঠানোর জন্য ডার্ককোমেট (DarkComet) ও নেটওয়্যার র‍্যাটস (NetWire RATs) নামে কয়েকটি ম্যালওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছিল।

২০২০ সালের ৮ অক্টোবর, ভীমা-কোরোগাঁও কাণ্ডের পর জঙ্গিযোগের অভিযোগে স্ট্যান স্বামীকে গ্রেফতার করে এনআইএ। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে একাধিক ডিজিটাল নথিপত্র জমা দিয়েছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু, মার্কিন ফরেন্সিক সংস্থার রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই সেইসব তথ্য নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

এর আগে আর্সেনাল জানিয়েছিল, ভীমা-কোরেগাঁও মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সুরেন্দ্র গাডলিং ও রোনা উইলসনের কম্পিউটারে হানা দিয়েছিল একই হ্যাকাররা। স্ট্যানের মতোই তাঁদের কম্পিউটারেও গোপনে ১৪ ও ৩০টি নথি ঢোকানো হয়।

স্ট্যান স্বামী
Elgar Parishad case: তিন বছর পার, এখনও বিনাবিচারে জেলবন্দী ১৩, মৃত ১ - জামিনে ২ জন
স্ট্যান স্বামী
আইন অপব্যবহার করে সমাজকর্মী স্ট্যান স্বামীর জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলা হয়েছিল - অমর্ত্য সেন

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in