লাগাতার বন্যায় বিধ্বস্ত আসামের ১৯টি জেলা। এখনও পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত দেড় হাজারের বেশি গ্রাম ও ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ, শনিবার তাদের সর্বশেষ বিবৃতিতে এমনটাই জানিয়েছে আসামের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর ‘আসাম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এএসডিএমএ)।
শুক্রবার বন্যা বিধ্বস্ত নলবাড়ি জেলায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। এই নিয়ে বন্যা বিপর্যয়ে ২ জনের মৃত্যু হল বলে জানিয়েছে আসাম প্রশাসন।
গত প্রায় দশদিন ধরে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির ফলে প্রবল বন্যায় ধুঁকছে গোটা আসাম। বন্যার জলে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে ব্রহ্মপুত্র। প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছে হাজার হাজার ঘর-বাড়ি। ঘরছাড়া হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। আসামের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের তরফে খবর, প্রায় ১৫৩৮টি গ্রামের ৪,৮৮,৫২৫ জন মানুষ এখনও পর্যন্ত এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। শুক্রবার নলবাড়ি জেলায় নিখিলেশ মল্লা বুজরবারওয়া নামের এক ব্যক্তির নিখোঁজ হওয়ার খবর সামনে আসে। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই ব্যক্তি বাড়ির কাছেই অসাবধানবশত বন্যার জলে পড়ে যান। পরে তাঁর দেহ খুঁজে পায় আসামের রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। এর আগে বৃহস্পতিবারই তমুলপুর জেলা থেকে প্রথম মৃত্যুর খবর সামনে আসে।
এএসডিএমএ-এর খবর অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত বক্সা, বাজালি, গোয়ালপাড়া, নলবাড়ি, ডিব্রুগড়, লখিমপুর, দারাং, নগাঁও, কামরূপ, তিনসুকিয়া-সহ মোট ১৯টি জেলা এই বন্যায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বাজালি জেলা। ওই জেলায় প্রায় ২৬৭২৫৩ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাজ্য জুড়ে প্রায় ২২৫টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সেই ত্রাণ শিবিরে অন্ততপক্ষে ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে রাজ্য সরকারের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, বন্যায় নিহতদের পরিবারকে রাজ্য সরকারের তরফে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রত্যেকটি বন্যা বিধ্বস্ত জেলার প্রশাসনকে পর্যাপ্ত খাদ্য, ওষুধপত্র ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলিতে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে প্রায় ১১ হাজার হেক্টর ফসলি জমি জলের তলায় রয়েছে। এর ফলে ফসলের ব্যাপকহারে ক্ষতি হচ্ছে বলে আফসোস কৃষকদের। এছাড়াও বিভিন্ন জেলায় প্রবল জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে ব্রিজ, রাস্তা, স্কুলের মতো সরকারি সম্পত্তি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন