আগামী ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি দুই দিন দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ ও সর্বভারতীয় কর্মী ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনসমূহ। বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল আগামী বাজেট অধিবেশনের মধ্যেই হবে দুই দিনের ধর্মঘট। গত ১১ নভেম্বর দিল্লিতে শ্রমিকদের জাতীয় কনভেনশনে কেন্দ্রের জনবিরোধী, শ্রমিক বিরোধী পদক্ষেপ রুখতে এবং শ্রমিকদের ১২ দফা দাবিতে দেশজুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের কর্মসূচি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
আপাতত সেই ধর্মঘট পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে ২৮ ও ২৯ মার্চ দেশ জুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি। বর্তমানে বিপর্যস্ত আর্থিক পরিস্থিতিতে দু’দিনের সাধারণ ধর্মঘটকে জনগন কতোটা সমর্থন করবেন, সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে শ্রমিক সংগঠনের অন্দরেই।
তার উপর ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যের বহু পুরসভায় নির্বাচন। নির্বাচনী ব্যস্ততার মাঝে ধর্মঘটের কর্মসূচি নেওয়া যে সম্ভব নয়, তা বলাই বাহুল্য। তবে শ্রমিক সংগঠনের বক্তব্য অনুযায়ী, তারা করোনা পরিস্থিতির কারণেই ধর্মঘট থেকে আপাতত পিছিয়ে এসেছে। সিপিআই(এম)-র রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের দাবি ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ। সুতরাং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তারাই নেবে।
প্রসঙ্গত, যৌথ মঞ্চে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে রয়েছে সিআইটিইউ, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি, এইচএমএস, এআইইউটিইউসি, টিইউসিসি, সেবা, এআইসিসিটিইউ, এলপিএফ, ইউটিইউসি এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মচারী ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনসমূহ। যৌথ মঞ্চের ১২ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে কৃষকদের বিভিন্ন দাবিও।
দাবিগুলি হলো:
(১) শ্রম কোড আইন বাতিল
(২) সংযুক্ত কিষান মোর্চার ৫ দফা দাবি কার্যকর
(৩) ন্যাশনাল মানিটাইজেশন পলিসির (NMP) নামে ঢালাও বেসরকারিকরণ চলবে না
(৪) মহামারীতে বিপর্যস্ত অবস্থায় আয়কর করের আওতার বাইরে থাকা সকল নাগরিককে মাসে নগদ ৭হাজার ৫০০ টাকা ও বিনামূল্যে খাদ্য সরবরাহ করতে হবে
(৫) রেগায় বরাদ্দ বাড়াতে হবে, শহরে রেগা প্রকল্প চালু করতে হবে
(৬) সমস্ত অসংগঠিত শ্রমিকের জন্য সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প চালু করতে হবে
(৭) অঙ্গন ওয়াড়ি কর্মীদের ন্যূনতম বেতন ও সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প চালু করতে হবে
(৮)মহামারীতে সামনের সারিতে থেকে রোগীর চিকিৎসার কাজে যুক্তদের যথার্থ নিরাপত্তা ও বিমার ব্যবস্থা করতে হবে,
(৯) কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ও অন্যান্য সামাজিক প্রকল্পে সরকারের বরাদ্দ বাড়াতে হবে
(১০) পেট্রোল ডিজেলে কর কমিয়ে দাম কমাতে হবে
(১১) বিভিন্ন প্রকল্পের ঠিকা কর্মীদের স্থায়ীকরণ করতে হবে, স্থায়ী কর্মীদের হারে তাঁদের বেতন বাড়াতে হবে
(১২) ন্যাশনাল পেনশন প্রকল্প (এনপিএস) বাতিল করে সকলের জন্য সার্বজনীন পেনশন চালু করতে হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন