রাজ্যের সমস্ত সরকারি স্কুলে বিনামূল্যে প্রাতঃরাশ প্রকল্প চালু করেছে তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকার। কিন্তু রাজ্যের একাধিক স্কুলেই দলিত মহিলাদের হাতে তৈরি খাবার খেতে নারাজ পড়ুয়ারা। অভিভাবকদের তরফেই পড়ুয়াদের ওই খাবার খেতে বারণ করা হচ্ছে। সম্প্রতি রাজ্যের কারুর জেলার এক স্কুলে এমন অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেন স্থানীয় জেলা প্রশাসক।
তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকার রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলির পড়ুয়াদের জন্য এক নয়া প্রকল্প চালু করেছে, বিনামূল্যে প্রাতঃরাশ। প্রায় সমস্ত স্কুলেই সেই খাবার রান্না করার জন্য নিযুক্ত করা হয়েছে দলিত মহিলাদের। কিন্তু উচ্চবর্ণের অভিভাবকদের নির্দেশে সেই দলিত মহিলা রাঁধুনিদের হাতে তৈরি খাবার খেতে অস্বীকার করেছে স্কুলগুলির পড়ুয়াদের একাংশ। সম্প্রতি কারুর জেলার ভেলানচাত্তিউরের পঞ্চায়েত ইউনিয়ন প্রাইমারি স্কুলে এরকম একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। পড়ুয়াদের অভিভাবকরা সেখানে তাঁদের ছেলেমেয়েদের এক দলিত মহিলা সুমথির রান্না করা খাবার খাওয়াতে অস্বীকার করে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান।
খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ওই স্কুলে ছুটে যান কারুর-এর জেলা প্রশাসক প্রভু শংকর। সেখানে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং দলিত মহিলার হাতের রান্না করা খাবার খেয়ে প্রাতঃরাশ করেন তিনি। পাশাপাশি, এইধরণের আচরণের জন্য অভিভাবকদের বিরুদ্ধে তফসিলি জাতি/উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনের আওতায় মামলা করার ভয় দেখান। এরপরে অভিভাবকদের একাংশ তাঁদের সন্তানদের ওই খাবার খাওয়ার অনুমতি দিলেও বাকিরা এখনও তাঁদের অবস্থান থেকে অনড়। পরবর্তীতে ওই অভিভাবকদের থানায় ডেকে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়েও সতর্ক করে দেয় পুলিশ।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই তিরুপুরের কলিঙ্গরায়ানপালায়াম পঞ্চায়েত প্রাইমারি স্কুলেও একইধরণের অভিযোগ ওঠে। সেই স্কুলের ৪৪ জন পড়ুয়ার মধ্যে ৩২ জনই দলিত রাঁধুনি দীপার হাতের রান্না খেতে অস্বীকার করে। এমনকি অভিভাবকদের তরফে স্কুলের কাছে ট্রান্সফার সার্টিফিকেটও দাবি করা হয়। তিরুপুরের জেলা প্রশাসক এই ঘটনায় মধ্যস্থতা করে অভিভাবকদের সতর্ক করেন, যদি তারা তাঁদের সন্তানদের দলিত মহিলা রাঁধুনির তৈরি খাবার খেতে বারণ করেন, সেক্ষেত্রে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন