রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। এই আইন বন্ধ করে এর অধীনে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তি দেওয়া যাবে কিনা, আজকের শুনানিতে কেন্দ্রের কাছে এর জবাব চাইলো আদালত। এই জবাব দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে সময় চায় কেন্দ্র। কেন্দ্রের আর্জি মেনে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছে আদালত। আগামীকালের মধ্যেই কেন্দ্রকে এই বিষয়ে জবাব দিতে হবে আদালতে।
প্রধান বিচারপতি এন ভি রমনা নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রের তরফ থেকে আদালতে উপস্থিত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতাকে বলে, "সরকারের কাছ থেকে এই বিষয়ে ইনস্ট্রাকশন নেওয়ার জন্য আমরা আপনাকে আগামীকাল সকাল পর্যন্ত সময় দেবো। পেন্ডিং মামলা এবং ভবিষ্যতের মামলাগুলো নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন, আইনটি পুনর্বিবেচনা না হওয়া পর্যন্ত সরকার কিভাবে এগুলোর (মামলাগুলোর) দেখাশোনা করবে তা ভাবাচ্ছে আমাদের। আইনটি পুনর্বিবেচনা না হওয়া পর্যন্ত এই আইনের অধীনে চলা বর্তমান মামলাগুলো স্থগিত রাখা যায় কিনা সেই বিষয়েও সরকারকে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে।"
এর আগে আইনটির অপব্যবহার সম্পর্কে পর্যালোচনা করার জন্য বেশি সময় চেয়েছিল কেন্দ্র। এর জবাবে প্রধান বিচারপতি কেন্দ্রকে তিরস্কার করে বলেন, "রাজ্যগুলি বলছে তারা আইনটি পুনর্বিবেচনা করছে। আমরা অযৌক্তিক হতে পারি না। বিবেচনার কতটা সময় দেওয়া যেতে পারে আমাদের তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কেউ কি মাসের পর মাস জেল থাকতে পারে? আপনাদের হলফনামায় বলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নাগরিক স্বাধীনতা, মানবাধিকার নিয়ে সচেতন। সেই স্বাধীনতা এইভাবে রক্ষা করছেন আপনারা?"
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪ এ ধারায় সরকারের বিরোধিতায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনার উল্লেখ রয়েছে। ব্রিটিশ শাসনে তৈরি এই আইনের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনকারীদের দমনপীড়ন। বর্তমান কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে এই আইনের অপব্যবহারের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। একাধিক আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে মামলা দায়ের করে তাঁদের দিনের পর দিন জেলে রাখা হয়েছে। অথচ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রমাণ দেখাতে পারছে না সরকার। এই অবস্থায় এই আইনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন