ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার-সহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের ক্ষেত্রে যুগান্তরকারী রায় দিল সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ।
বৃহস্পতিবার, এক রায়ে দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, 'নির্বাচনের বিশুদ্ধতা বজায় রাখার' লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠিত হবে। তাতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলের নেতা ও ভারতের প্রধান বিচারপতি। এই কমিটির কমিটির পরামর্শেই নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ করা হবে। একই ভাবে নিযুক্ত হবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারও।
বিচারপতি কে এম জোসেফ, অজয়রাস্তোগী, অনিরুদ্ধ বোস, হৃষিকেশ রায় এবং সিটি রবিকুমারের সমন্বয়ে গঠিত সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘গণতন্ত্র- জনগণের ক্ষমতার সঙ্গে ওতপ্রতভাবে জড়িত। তাই, গণতন্ত্রে নির্বাচনের বিশুদ্ধতা বজায় রাখতে হবে, অন্যথায় তা বিপর্যয় ডেকে আনবে।'
সুদূরপ্রসারী এই রায়ের অর্থ হল, নির্বাচন কমিশনেরও একটি স্বাধীন সচিবালয় থাকবে। শুধু তাই নয়- স্বাধীন নিয়ম প্রণয়নের ক্ষমতা, বাজেট তৈরি এবং ইম্পিচমেন্টের সুরক্ষা পাবে কমিশন।
বর্তমানে, কমিশন পরিচালনার জন্য জে তহবিল প্রয়োজন, তা পেতে প্রধানমন্ত্রীর আধিকারিক এবং আইন মন্ত্রকের কাছে যেতে হয়। তবে, সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের ফলে, ভারতের তহবিল থেকে সরাসরি তহবিল তুলতে পারবে।
বর্তমানে, প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং দুইজন কমিশনারকে ছয় বছরের মেয়াদের জন্য নিয়োগ করেন। কিন্তু, সেই ধারায় বদল এনে, সিবিআই, সিভিসি সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য বাছাই করা হয়। সেই একই পথ অনুসরণ করা হবে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে।
বিচারপতিদের সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছে, দেশে অনেক রাজনৈতিক দলই ক্ষমতায় এসেছে। তবে তাদের কেউই নির্বাচন কমিশনের নিয়োগের জন্য আইন/প্রক্রিয়া তৈরি করেনি। সংবিধানের ৩২৪ নম্বর অনুচ্ছেদের অধীনে এই বিষয়ে আইন প্রণয়ন করা 'অনিবার্য প্রয়োজনীয়তা' বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া, কিভাবে ২৪ ঘন্টার মধ্যে 'বিদ্যুৎ গতিতে' প্রাক্তন আইএএস অফিসার অরুণ গোয়েলকে নতুন নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিয়োগে দেওয়া হল? সেই প্রশ্নও কেন্দ্রকে করেছে সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে, শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, নতুন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ফাইল আদালতে জমা করতে হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন