BBC-র তথ্যচিত্র কেন নিষিদ্ধ, তা জানতে চেয়ে কেন্দ্র সরকারকে নোটিশ পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট। সেইসঙ্গে, নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্তের আসল রেকর্ড আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি এমএম সুন্দ্রেশের বেঞ্চ।
শুক্রবার, শীর্ষ আদালত স্পষ্ট করে জানিয়েছে, আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রকে এই নথি জমা দিতে হবে।
গত ২১ জানুয়ারি, ২০০২ সালের 'গুজরাট হিংসা’ নিয়ে বিবিসি (BBC)-র তথ্যচিত্র 'ইন্ডিয়া: দ্যা মোদী কোয়েশ্চেন'-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে কেন্দ্রের মোদী সরকার। সেই নিষেধাজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে, ৩০ জানুয়ারি, সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন আইনজীবী এম এল শর্মা (Advocate M.L. Sharma)।
শীর্ষ আদালতের কাছে শর্মা জানান, '২১ জানুয়ারি, মোদী সরকারের দেওয়া এই নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত আদেশটি বেআইনি, বিকৃত, স্বেচ্ছাচারী এবং অসাংবিধানিক। তাই এই আদেশটি বাতিলের নির্দেশিকা জারি করা উচিত।'
আদালতে তিনি বলেন, 'রাষ্ট্রপতি (President of India) কর্তৃক ভারতীয় সংবিধানের ৩৫২ অনুচ্ছেদের অধীনে দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা না করেই, কী করে জরুরি বিধানগুলি আহ্বান করতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার?'
জনস্বার্থ মামলায় আইনজীবী শর্মা প্রশ্ন তোলেন, 'শীর্ষ আদালতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, সংবিধানের ১৯ (১) (২) ধারার অধীনে ভারতের নাগরিকদের ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার খবর, তথ্য এবং প্রতিবেদন দেখার অধিকার আছে কিনা?'
একইসঙ্গে, মোদী তথ্যচিত্রের উপর কেন্দ্রের নিষেধাজ্ঞা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তা 'ব্লক' করা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পৃথক মামলা করেন প্রবীণ সাংবাদিক এন রাম, আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ ও তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র। সেই মামলারও শুনানি হয় এদিন।
শীর্ষ আদালতে সকলে অভিযোগ করেন, 'তথ্যচিত্রটি ব্লক করা, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে লিঙ্কগুলি সরিয়ে নেওয়ার জন্য জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে, এই নিষেধাজ্ঞা জারির আদেশ নিয়ে কখনোই প্রচার করেনি সরকার।'
এদিকে, এই তথ্যচিত্রকে বিভ্রান্তিকর, প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর বিষয়বস্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্রের বিদেশ মন্ত্রক। যদিও বিবিসির পক্ষ থেকে বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, যথেষ্ট গবেষণা করেই এই তথ্যচিত্র তৈরি করা হয়েছে। এডিটোরিয়াল বিষয়বস্তুর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেই আসল তথ্য তুলে ধরা হয়েছে বলে দাবি বিবিসির।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন