নির্বাচনী বন্ড নিয়ে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বা এসবিআইকে সম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ করতে হবে। সোমবার এই সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে এমনই জানালো সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ। আগামী বৃহস্পতিবার ২১ মার্চ বিকাল ৫ টার মধ্যে নির্বাচনী বন্ডের যাবতীয় তথ্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার আদালতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, "আমরা চাই নির্বাচনী বন্ড সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য প্রকাশ করা হোক যা আপনাদের কাছে রয়েছে।" নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে দেওয়া অনুদানের উপর এসবিআই-এর দেওয়া "অসম্পূর্ণ তথ্য"র বিরুদ্ধে এক আবেদনের শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি একথা বলেন।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর গত মঙ্গলবার ১২ মার্চ নির্বাচন কমিশনের কাছে ইলেক্টোরাল বন্ডের সমস্ত তথ্য জমা করতে বাধ্য হয়েছিল স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। পেশ করা তথ্য ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার নিজেদের ওয়েবসাইটে আপলোড করে দেশের নির্বাচন কমিশন। সেই তথ্য খতিয়ে দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছিল, এসবিআই-র উচিত ছিল নির্বাচনী বন্ডের নম্বর প্রকাশ্যে আনা। কিন্তু সেটা করেনি তারা। নির্বাচনী বন্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নম্বর না দেওয়ায় সমস্ত বিষয় স্পষ্ট হচ্ছে না।
সোমবার শুনানি চলাকালীন, এসবিআইকে নির্বাচনী বন্ডের নম্বর প্রকাশ্যে আনার কথাও মনে করিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় স্টেট ব্যাঙ্কের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমরা নির্বাচনী বন্ড নিয়ে আপনাদের কাছে থাকা সমস্ত তথ্য চাই।” এরপরেই এসবিআইয়ের সম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ্যে না আনা নিয়ে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করে বলেন, “স্টেট ব্যাঙ্কের ভাবভঙ্গি এমন যে, আপনারা প্রকাশ করতে বলেছেন, তাই আমরা প্রকাশ করছি। কিন্তু এটা ঠিক নয়। আমরা যখন বলেছি সব তথ্য চাই, তখন সব তথ্যই প্রকাশ করতে হবে।“
এদিন স্টেট ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী হরিশ সালভে। তিনি আদালতে জানান, নির্বাচনী বন্ডের নম্বর আদালতে কাছে পেশ করবেন তারা। পাশাপাশি, স্টেট ব্যাঙ্ক সম্পূর্ণ তথ্য পেশ করলে, তা সরকারি ওয়েবসাইটে আপলোডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে।
উল্লেখ্য, এখনও পর্যন্ত যে তথ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে সেই তথ্য অনুসারে, সবথেকে বেশি বন্ড কিনেছে মার্টিন সান্তিয়াগোর সংস্থা 'ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস'। তারা ১৩৬৮ কোটি টাকার বন্ড কিনেছে। তারপর রয়েছে তেলুগু ব্যবসায়ী কৃষ্ণা রেড্ডির সংস্থা 'মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড' (৯৬৬ কোটি)। তৃতীয় স্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্রের ক্যুইক সাপ্লাই চেন প্রাইভেট লিমিটেড (৪১০ কোটি)। চতুর্থ স্থানে আছে ভেদান্ত লিমিটেড (৪০০ কোটি)। ৩৭৭ কোটি ব্যয় করে পঞ্চম স্থানে রয়েছে হলদিয়া এনার্জি লিমিটেড।
অন্যদিকে, তথ্য অনুসারে নির্বাচনী অনুদান প্রাপকদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বিজেপি। ৬,০৬০ কোটি টাকা রাজনৈতিক অনুদান হিসাবে পেয়েছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দলটি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, ১,৬০৯ কোটি টাকা অনুদান পেয়েছে তারা। কংগ্রেস পেয়েছে ১,৪২২ কোটি টাকা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন