জেলের মধ্যে চলবে না জাতিবৈষম্য। জেল বন্দিদের মধ্যে কাজ সমান ভাগে ভাগ করে দিতে হবে। সকলকে সমান চোখে দেখতে হবে। বৃহস্পতিবার একটি মামলায় এমনই মন্তব্য করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। পাশাপাশি, এই নিয়ম বদলের জন্য রাজ্যগুলিকে নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। বেঁধে দেওয়া হয়েছে তিনমাসের সময়সীমাও।
অভিযোগ উঠেছে, জেলের মধ্যেও রয়েছে জাতিবৈষম্য। বন্দিদের কাজ ভাগ করে দেওয়ার সময় এই বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়। এই বিষয়ে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, জেলের মধ্যে ঝাঁট দেওয়া বা এই ধরণের কাজ গুলি দেওয়া হয় নিচু জাতের মানুষদের। এবং রান্না করা অথবা এই ধরণের কাজ দেওয়া হয় উঁচু জাতের মানুষদের।
প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, বন্দিদের মধ্যে কাজ ভাগ নিয়ে এই বৈষম্য সংবিধানের ১৫ নম্বর ধারার পরিপন্থী। ওই ধারা অনুযায়ী, ধর্ম, জাতি, লিঙ্গ, বর্ণ বা জন্মস্থানের ভিত্তিতে নাগরিকদের সঙ্গে কোনও বৈষম্য করা যায় না। দেশের বিভিন্ন জেলে বৈষম্যমূলক নিয়ম প্রচলিত রয়েছে, তাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলেছেন প্রধান বিচারপতি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘সমাজে সকলেই সমান হয়ে জন্মেছেন। এখানে জাত নিয়ে কোনও ভেদাভেদ থাকতে পারে না।’’
প্রধান বিচারপতি দেশের প্রত্যেকটি রাজ্যকে এই নিয়ম বদলের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী তিনমাসের মধ্যে এই নিয়ম বদলাতে হবে। এরপরেও যদি কোনো জেলে এই বৈষম্য থাকে, তাহলে তার দায় জেল কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে বলে জানান প্রধান বিচারপতি। পাশাপাশি, তিনি আরও জানিয়েছেন, জেলের নিয়মকানুনের বই এবং রেজিস্টার থেকে ‘জাতি’ শব্দটিই মুছে দিতে হবে। বন্দিদের নাম এবং আইনি সংজ্ঞার ভিত্তিতে চিহ্নিত করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘বন্দিদের প্রাপ্য মর্যাদা না দেওয়া আসলে ঔপনিবেশিক শাসনের প্রতিফলন।’’ কারাগারে প্রচলিত এই নিয়মগুলিকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে মন্তব্য আদালতের।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন