আদালত তাঁর ‘লক্ষ্মণ রেখা’র ব্যাপারে ওয়াকিবহাল। কিন্তু, ২০১৬ সালে নোটবন্দির বিষয়টি সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল কিনা, বা এর মধ্যে অন্য কিছু রয়েছে কিনা - তা খতিয়ে দেখবে সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার, কেন্দ্রকে একথা সাফ জানিয়েছে বিচারপতি সৈয়দ আবদুল নাজিরের নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ।
বিচারপতিদের বেঞ্চ বলেছে, সাংবিধানিক বেঞ্চের সামনে যখন কোনও সমস্যা উত্থাপিত হয়, তখন সেই ব্যাপারে আদালতের অবস্থান স্পষ্ট করা কর্তব্য। কেন্দ্রীয় সরকারের আপত্তি উড়িয়ে আদালত জানিয়েছে, ওই সিদ্ধান্তের ভাল-মন্দ আদালত পর্যালোচনা করতেই পারে।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরমানি মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। তিনি আদালতে জানান, 'নোটবন্দি সরকারের একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত। সেই ব্যাপারে আদালতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।' তিনি দাবি করেন, 'নোটবন্দি করা হয়েছিল আইন মেনেই। অর্থনীতির ক্ষতি আটকাতে ১৯৭৮ সালে জনস্বার্থে কিছু উচ্চ মূল্যের নোটের বিমুদ্রাকরণের লক্ষ্যে আইন তৈরি হয়েছিল।'
জবাবে সাংবিধানিক বেঞ্চ জানায়, 'প্রশ্নটা হল নোটবন্দির কোনও অ্যাকাডেমিক ভিত্তি আছে কিনা, তা আমাদের জানতে হবে। মামলার মূল বিষয় হল সরকারের নীতি ও তার প্রাজ্ঞতা। আমরা জানি যে লক্ষ্মণরেখাটা কোথায়। তবে, নোটবন্দির সিদ্ধান্ত যেভাবে জারি হয়েছিল, তা পর্যালোচনা করা জরুরি।'
এরপরেই সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, 'সরকারের নীতিগত বিষয়ে আদালতের সময় নষ্ট করা উচিত নয়।' এই কথা শুনে মামলাকারী বিবেকনারায়ণ শর্মার আইনজীবী শ্যাম দিভান বলেন, 'এটা শুনে আশ্চর্য হচ্ছি যে এই মামলাকে সময় নষ্টের দায়ে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। অথচ সর্বোচ্চ আদালতই মামলার গুরুত্ব বিচার করে সেটি সাংবিধানিক বেঞ্চের কাছে পাঠিয়েছে।'
আরেক মামলাকারীর হয়ে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে সওয়াল করেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা আইনজীবী পি চিদাম্বরম। তিনি জানান, নোটবন্দির সিদ্ধান্ত আদৌ অ্যাকাডেমিক কি না, সেটা আদালতকে দেখতে হবে।
চিদাম্বরম জানান, এই ধরনের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের জন্য সংসদের একটি পৃথক আইন দরকার।
এর আগে, ২০১৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর, তৎকালীন প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুরের নেতৃত্বাধীন শীর্ষ আদালতের একটি বেঞ্চ নোটবন্দির সিদ্ধান্তের বৈধতা এবং অন্যান্য বিষয় সংক্রান্ত মামলা পাঁচ বিচারপতির একটি বৃহত্তর বেঞ্চের কাছে রেফার করেছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন