ভারী বৃষ্টিতে ফের বন্যা পরিস্থিতি তামিলনাড়ুতে। শনিবার থেকে দক্ষিণের এই রাজ্যের চার জেলায় অবিরাম বৃষ্টি হয়েই চলেছে। ইতিমধ্যেই একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ব্যাহত হয়েছে ট্রেন চলাচলও। বন্ধ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে থামিরাবরণী নদীর জল।
তুতিকোরিন, তেনকাশি, তিরুনেলভেলি এবং কন্যাকুমারী এই চার জেলায় শনিবার ভোর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত তুতিকোরিনের থিরুচেনদুরে ৬০ সেন্টিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তিরুনেলভেলি জেলার পালয়মকোট্টাইতে ২৬ সেমি বৃষ্টি হয়েছে। কন্যাকুমারীতে হয়েছে ১৭.৩ সেমি বৃষ্টিপাত। সোমবারও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর।
পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ একাধিক ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে। দক্ষিণ রেলের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, তিরুনেলভেলি -তিরুনচেনদুর শাখায় বহু ট্রেন বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। ইতিমধ্যে মোট ১৭টি ট্রেন বাতিল হয়েছে যার মধ্যে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসও রয়েছে। শুধুমাত্র রেল পরিষেবাই নয় বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে আকাশপথেও। যার জেরে বাতিল হয়েছে একাধিক বিমান। বহু বিমানের পথ ঘুরিয়েও দেওয়া হয়েছে।
কার্যত বিপর্যস্ত তামিলনাড়ুতে সোমবার ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। সমস্ত স্কুল, কলেজ, ব্যাঙ্ক, বেসরকারি অফিস, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। অতিবৃষ্টির ফলে পাপানাসাম, পেরুনজানি এবং পেচুপারাই বাঁধ থেকে জল ছাড়া হয়। যার জেরে তামিলনাড়ুর ৪ জেলার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। কন্যাকুমারী, তিরুনেলভেলি জেলার বেশীরভাগ জায়গায় হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত জল রয়েছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। মন্ত্রী ও আমলাদের সোমবার থেকেই ত্রাণের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রতিটি জেলা পর্যবেক্ষণের জন্য একজন আমলাকে নিয়োগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন।
ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত উদ্ধারের জন্য মোতায়েন রয়েছে ৫০ সদস্যের দুটি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা টিম (NDRF)। কন্যাকুমারীতে মোতায়েন রয়েছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দল (SDRF)। প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৮ হাজার মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৮৪টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। তুতিকোরিন জেলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহতেই ঘূর্ণিঝড় 'মিগজাউমে'র কারণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তামিলনাড়ুতে। একাধিক শহরে বিপর্যস্ত হয় জনজীবন। বহু মানুষের মৃত্যুও হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন