অনলাইন রামি (Rummy) খেলা এখন তামিলনাড়ুতে রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। দুটি স্বাধীন দুটি স্বাধীন গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, গত এক বছরে রাজ্যে অনলাইন রামি খেলার কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে যে দাবি করা হয়েছে, তা অতিরঞ্জিত।
এক সমীক্ষায় চেন্নাইয়ের ‘দ্যা রোটারি রেনবো প্রজেক্ট’ জানিয়েছে, তাঁদের পর্যবেক্ষকরা সমীক্ষাকালে আত্মহত্যাকারীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছে। তার মধ্যে, অনলাইন রামি গেমের কারণে যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলা হচ্ছে, তা সঠিক নয়।
তাঁদের (আত্মহত্যাকারীর) মধ্যে রয়েছে- কোয়েম্বাটোরের এক কনস্টেবল এবং চেন্নাইয়ের এক পেইন্টিং ঠিকাদার, নাম নাগরাজন। দুজনেই, ২০২২ সালের জুন-জুলাইয়ের মধ্যে আত্মহত্যা করে।
রোটারি রেইনবো প্রজেক্টকে উভয় আত্মহত্যাকারীর পরিবার নিশ্চিত করেছে যে, তাদের আত্মহত্যার আসল কারণ ছিল ঋণের ফাঁদ, অনলাইন রমি নয়।
এছাড়া, মনোরোগ বিদ্যার অধ্যাপক ডাঃ সন্দীপ এইচ. শাহ ও চেন্নাই গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজের ডিন, গোধরা যৌথ কমিটির এক গবেষণায় বলা হয়েছে, পাবলিক ডোমেনে এমন তথ্য নেই, যেখানে জানানো হয়েছে তামিলনাড়ুতে অনলাইন গেমিংয়ের কারণে আত্মহত্যা হয়েছে।
সম্প্রতি, তামিলনাড়ুতে অনলাইন রামিকে আত্মহত্যার প্রধান কারণ হিসাবে দায়ী করেছে রাজনৈতিক দল ও সমাজ কর্মীরা। যা নিয়ে ইতিমধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। এবার, সেই দাবিকেই প্রশ্নচিহ্নের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে বিশেষজ্ঞদের গবেষণা।
ঐতিহাসিকভাবে সারাদেশের মধ্যে তামিলনাড়ুতে আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি।
১৯৬৬ সাল থেকে, দেশেজুড়ে সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধের তালিকা নথিভুক্ত করা শুরু করে- ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো (NCRB)। এরমধ্যে, গত ৫০ বছরের আত্মহত্যায় মৃত্যুর তালিকায় শীর্ষ দুই/তিনটি রাজ্যের মধ্যে জায়গা পেয়েছে তামিলনাড়ু।
সর্বশেষ NCRB তথ্য অনুসারে, ভারতে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার রাজ্যগুলির মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তামিলনাড়ু। প্রথম স্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্র।
NCRB -র মতে, আত্মহত্যার প্রধান কারণ হল কেরিয়ার গঠন নিয়ে হতাশা, একাকীত্ব, অপব্যবহার, সহিংসতা, পরিবারিক দ্বন্দ্ব, মানসিক অসুস্থতা, মদ্যপান, আর্থিক ক্ষতি এবং দীর্ঘস্থায়ী যন্ত্রণা।
২০২১ সালে, তামিলনাড়ুতে পূর্ববর্তী AIADMK সরকার, রামি ও পোকারের মতো অনলাইন বেটিং গেম নিষিদ্ধ করার জন্য গেমিং এবং পুলিশ (সংশোধনী) আইন প্রণয়ন করেছিল। তবে, এই আইন খারিজ করে দেয় মাদ্রাজ হাইকোর্ট।
বর্তমান সরকার অনলাইন গেমিং এর প্রভাব খতিয়ে দেখতে বিচারপতি কে. চন্দ্রুর নেতৃত্বে একটি কমিটি নিযুক্ত করেছিল। সেই কমিটি রিপোর্টও পেশ করেছে। তবে, সরকার বিতর্কিত এই ইস্যুতে এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন