বিদ্যুৎ শুল্ক বৃদ্ধির বিরুদ্ধে পাওয়ার লুম শ্রমিকদের ধর্মঘট সোমবার চতুর্থ দিনে প্রবেশ করলো। জানা গেছে তাঁত শ্রমিকদের এই ধর্মঘটের ফলে প্রতিদিন আনুমানিক ৩৫ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে৷ বিদ্যুতের বর্ধিত দাম প্রত্যাহারের দাবিতে শ্রমিকরা এই ধর্মঘট চালাচ্ছেন।
শ্রমিক ধর্মঘটে তামিলনাড়ুর দুই জেলা, তিরুপুর এবং কোয়েম্বাটোরকে প্রভাবিত করেছে। যেখানে সর্বাধিক সংখ্যক পাওয়ার লুম অবস্থিত। রাজ্যের শিল্প দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ধর্মঘটের কারণে এই দুই জেলার ১ লাখ ৭৫ হাজার পাওয়ার লুম বন্ধ রয়েছে।
তাঁত শ্রমিকদের সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে, কোয়েম্বাটোর এবং তিরুপুরের পাওয়ার লুম ইউনিটের তাঁত শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি সি. পালানিস্বামী বলেন, "ধর্মঘট আজ চতুর্থ দিনে প্রবেশ করেছে এবং এর ফলে প্রতিদিন ৩৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ১ কোটি মিটারের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। ধর্মঘটের কারণে কাপড়ের দৈর্ঘ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।"
প্রসঙ্গত, তামিলনাড়ুতে দুই লাখ শ্রমিক প্রত্যক্ষভাবে পাওয়ার লুমের সঙ্গে যুক্ত এবং আরও তিন লাখ শ্রমিক পরোক্ষভাবে দুই জেলার পাল্লাদাম এবং সোমান্নুর এলাকায় ছড়িয়ে থাকা পাওয়ার লুমে নিযুক্ত আছেন। এই অঞ্চলেই সর্বাধিক পাওয়ারলুম ইউনিট আছে।
শ্রমিকেরা প্রায় সবাই অন্য কোনো পেশা না জানার কারণে দিশেহারা। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে তারা জানুয়ারিতে ধর্মঘট করলেও মার্চে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। মে মাস থেকে তুলা ও সুতার দাম বৃদ্ধি পাওয়ার তাঁত থেকে কাপড়ের উৎপাদনও বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমান ধর্মঘট শ্রমিকদের উপরও সরাসরি প্রভাব ফেলবে কারণ পাওয়ার লুম বন্ধ করার অর্থ কাজ নেই এবং তাই হাতে টাকাও নেই।
শানমুগানাথন টি., পাল্লাদমের একজন পাওয়ার লুম তাঁতশিল্পী আইএএনএস-এর সাথে কথা বলার সময় জানিয়েছেন, "আমি নিশ্চিত নই যে ধর্মঘট কবে শেষ হবে৷ আমরা 2022 সালের জানুয়ারিতে মজুরি বৃদ্ধির জন্য ধর্মঘট করেছি এবং মার্চ মাসে এই ধর্মঘট প্রত্যাহার করার আগে দুই মাস ধরে ধর্মঘট চলেছিল৷ তুলা ও সুতার দাম বৃদ্ধির কারণে এবং বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কারণে অনেক তাঁত বন্ধ হয়ে গেছে। এসবই সরাসরি শ্রমিকদের ওপর প্রভাব ফেলছে এবং আমরা আর কী করব তা আমরা জানি না। আমরা শুধুমাত্র এই কাজের জন্যই প্রশিক্ষিত।"
তিনি বলেন যে নতুন বিদ্যুতের শুল্ক বৃদ্ধির ফলে প্রতিটি পাওয়ার লুম ইউনিটের প্রতি মাসে ৮,০০০ – ৯,০০০ টাকা খরচ বেড়ে যাবে। যা পাওয়ার লুম শ্রমিকদের ক্ষেত্রে একটি বড় বৃদ্ধি।
পাওয়ার লুম তাঁতীদের আরও দাবি যে একটি ইউনিটের জন্য ৭৫০ ইউনিটের বেশি বিদ্যুতের নির্দিষ্ট চার্জ বৃদ্ধি তাদের উপরও বোঝা তৈরি করছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন